বরগুনায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগে এক নারীকে ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও তাকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো দু’মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বুধবার দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা জজ মো. মশিউর রহমান খান এ রায় দেন। রায়ের সময় দণ্ডিত অর্থ আদায় করে বাদী আকরামকে দিতে বলা হয়।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন, বরগুনা সদর উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের শশাতলা গ্রামের জামাল মল্লিকের স্ত্রী রুমা আক্তার। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আশ্রাফুল আলম।

জানা যায়, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রুমা আক্তার ২০১৭ সালের ১০ মার্চ ঐ ট্রাইব্যুনালে একই গ্রামের নুরু সরদারের ছেলে আকরামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

তিনি অভিযোগ করেন, তার স্বামী বাড়িতে প্রায়ই থাকে না। এ সুযোগে আকরাম প্রায়ই রুমা আক্তারকে উত্ত্যক্ত করতেন। ঘটনার দিন ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৭টার সময় একই গ্রামের লুৎফার বাড়ি হতে বিলের মধ্য দিয়ে নিজ বাড়িতে আসছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি আসলে আকরাম অসৎ উদ্দেশ্যে রুমা আকতারকে ঝাপটে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।

রুমার সঙ্গে থাকা তার স্বামী জামাল মল্লিক রুমাকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে আকরাম তাকে পিটিয়ে আহত করেন। আসামি আকরাম ভিকটিম রুমা আক্তারের কাপড় চোপড় খুলে ফেলেন। রুমা আকতার নিজেকে ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা করেন।

ট্রাইব্যুনাল মামলাটি বরগুনা থানায় এজাহারের নির্দেশ দেয়। বরগুনা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩১ মে চুড়ান্ত প্রতিবেদন (মিথ্যা) দাখিল করেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, আকরাম নির্দোষ এবং বাদী রুমা আকতার মিথ্যা মামলা করেছেন। বাদী রুমা আকতার ঐ ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে না রাজি আবেদন করলে তাও ট্রাইব্যুনাল নাকচ করে দেন।

আসামি আকরাম বলেন, আমার মান সম্মান রুমা আক্তার শেষ করে দিয়েছে। তিনি রুমা আক্তারের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল ঐ ট্রাইব্যুনালে মিথ্যা মামলা করার প্রতিকার চেয়ে মামলা করেন।

তিনি তার মামলায় অভিযোগ করেন, ‘রুমা আমার চেয়ে বয়সে বড়। তার স্বামীর সঙ্গে আমার জমিজমা নিয়ে বিরোধ থাকার কারণে আমার বিরুদ্ধে রুমা জঘন্য ও মিথ্যা মামলা করেছিলেন।’

রুমা আকতার কোর্ট প্রাঙ্গণে বলেন, ‘আমি প্রথমে হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন এনেছিলাম। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমি আবার হাই কোর্টে আপিল করব।’

রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আশ্রাফুল আলম বলেন, আকরাম ন্যায় বিচার পেয়েছেন। এই ম্যাসেসটি জনগণের কাছে পৌঁছলে এভাবে কেউ আর মিথ্যা মামলা করবে না।