শিক্ষক বাবার সঙ্গে চার সন্তানের প্রতারণা

প্রকাশিত: ১:১৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৬, ২০২২

নিউজটি শেয়ার করুন

 

বরিশাল, নবকন্ঠ ডেস্ক :: মাদারীপুরের কালকিনিতে করিম বেপারী (৯০) নামে এক বৃদ্ধ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের জমি জোর করে লিখে নেওয়ার পর ভরণপোষণ দিচ্ছে না তার সন্তানরা। এ ঘটনার পর ওই বৃদ্ধ শিক্ষক বর্তমানে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মেঝ ছেলের বাড়িতে মানববেতর জীবনযাপন করছেন। সোমবার দুপুরে ওই এলাকায় সরেজমিনে গেলে এমনই দৃশ্য চোখে পড়েছে।

 

 

করিম বেপারী পৌর এলাকার দক্ষিণ রাজদী ১নং ওয়ার্ডের সাহেদ আলী বেপারীর ছেলে।

 

 

জানা যায়, অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক করিম বেপারীর ৪ ছেলে ও ৩ মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী মারা গেছে অনেক আগে। করিম বেপারীকে সারাজীবন সেবা-যত্ন করার কথা বলে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে তার ছোট ছেলে শাহিন, মেয়ে নেহার বেগম, বিলকিছ বেগম ও রোকশানা বেগম মিলে ৩২ শতাংশ জমি ৩ বছর আগে লিখে নেয়। এ জমি লিখে নেওয়ার পর তারা আর তাদের বাবা করিম বেপারীর কোনো খোঁজখবর নেন না।

 

 

বর্তমানে বৃদ্ধ করিম বেপারী নিরুপায় হয়ে তার মেঝ ছেলে মাহাবুবের বাড়িতে কোনো মতে আশ্রয় নিয়েছেন।

 

 

মেঝ ছেলে মাহাবুব অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা অসুস্থ তাই এই সুযোগে তাকে দেখাশোনার কথা বলে আমার ছোট ভাই শাহিন, বোন নেহার বেগম, বিলকিছ বেগম ও রোকশানা বেগম মিলে ৩২ শতাংশ জমি লিখে নিয়ে গেছে। আমার বাবা বলেছিল ৪ শতাংশ নিতে। কিন্তু তারা প্রতারণার মাধ্যমে নিয়েছে ৩২ শতাংশ। এখন তারা আমার বাবার চিকিৎসা করাচ্ছে না। বর্তমানে আমার বাবা আমার বাড়িতে বাকরুদ্ধ অবস্থায় আছেন। আমি গরিব হওয়ায় নিজেই ঠিকমতো সংসার চালাতে পারি না। যারা জমি লিখে নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করবে বাবা।

 

 

প্রতিবেশীরা জানান, বৃদ্ধ করিম বেপারী শারীরিকভাবে এতোটাই দুর্বল যে নিজে উঠে দাঁড়ানোর মতো শক্তিও তার নেই। এদিকে, তার মেঝ ছেলে মাহাবুব আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় বাবার চিকিৎসাও করাতে পারছে না।

 

 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সন্তান শাহিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। আরেক সন্তান নেহা বেগম বলেন, আমরা জোর করে বাপের জমি দলিল করে নেইনি। বাবা আমাদের দিয়েছে।

 

 

এ বিষয়ে কালকিনি পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. নাসির উদ্দীন বলেন, বিষয়টা আমি আপনার কাছেই শুনলাম। আমি তার সন্তানদের সঙ্গে কথা বলে যেভাবে ভালো হয় সেটাই করবো।

 

 

এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিংকি সাহা বলেন, বিষয়টি খুবই অমানবিক। আমি খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ