ঢাকা ১০ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৫৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২
নবকন্ঠ ডেস্ক, বরিশালঃ বরগুনার বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মার্কশিট বিতরণে ৫০০ টাকা করে দিতে প্রতি শিক্ষার্থীকে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ করলে শিক্ষার্থীরা মার্কশিট পাবে না বলেও জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষের জানালা, দরজা ও ইলেকট্রিক ফ্যান ভাঙচুর করে।
মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানান, মার্কশিট বিতরণে বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোন বিধান নেই। এদিকে প্রধান শিক্ষক বলছেন, প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে নিতে পারেন। তবে একজন প্রধান শিক্ষকের এমন ‘হাস্যকর’ উক্তি বেতাগীতে এখন টক অব দ্যা টাউন।
জানা যায়, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অনুষ্ঠিত এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। এরপরই শুরু হয় একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া। এ পরীক্ষায় বেতাগীর মোকামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১০৫ জন পরিক্ষার্থীর মধ্যে ৯৭ জন উর্ত্তীণ হন। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি এইচএসিতে ভর্তির শেষ তারিখ, তবে টাকা দিয়ে মার্কশিট নিতে না পারার কারণে এইচএসসিতে ভর্তি হতে পারছেন না মোকমিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে উর্ত্তীণ হওয়া ৯৭ জন শিক্ষার্থী।
এ নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মারুফ আকন ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তার ক্ষমতার দাপটে প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন এসব অনিয়ম দুর্নীতি করেন।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তারা মার্কশিট আনতে গেলে তাদেরকে ৫০০ টাকা জমা দিতে চাপ দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ করলে প্রধান শিক্ষক জানান তাদের মার্কশিট দেওয়া হবে না, তারা কীভাবে কলেজে ভর্তি হয় তা দেখে নেবেন!
মোকামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। আর এটির নিয়মও আছে। শিক্ষার্থীরা কেন ক্ষিপ্ত হয়ে ভাঙচুর করেছে আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি করেছি বিষয়টি তদন্ত কমিটি দেখবেন। তবে বিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি জানানের প্রয়োজন মনে করিনি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মারুফ আকন বলেন, টাকা নেওয়ার বিধান নেই জানতাম না। তবে প্রধান শিক্ষক বলেছেন, একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বিভিন্ন খাত দেখিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তিন হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত নিতে পারে।
বেতাগী উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মো. শহিদুর রহমান বলেন, মার্কশিট বিতরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটি বোর্ড থেকে নির্দেশনা দেওয়া। এত ঘটনা ঘটে গেছে আমি এ ব্যাপারে প্রথম শুনলাম, আমাকে প্রধান শিক্ষকও জানাননি। অতি শীঘ্রই এ অনিয়মের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, বিষয়টি শুনলাম তদন্ত করে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক