ঢাকা ৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:০৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০২০
পিরোজপুর : পিরোজপুরের চীনা নাগরিক লাও প্যান ইয়াংজুন (৫৮) হত্যা মামলার প্রধান আসামি হোসেন সেখ (১৯) এবং তার সহযোগী সাব্বির আহম্মেদ সেখকে (২০) গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে পিরোজপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম।
গ্রেফতার হোসেন সেখ পিরোজপুর সদর উপজেলার মরিচাল এলাকার ছোরাপ সেখের ছেলে এবং সাব্বির সেখ একই এলাকার হায়দার আলী সেখের ছেলে।
ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম জানান, টাকা ছিনতাইয়ের জন্য চীনা নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গ্রেফতার সাব্বির সেখ নির্মানাধীন অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুতে কর্মরত একজন স্থানীয় শ্রমিক। সে প্রায় দেড় বছর ধরে সেখানে কাজ করে আসছে। চীনা নাগরিক হত্যার মূল ঘাতক হোসেন সেখ নির্মাণ শ্রমিক সাব্বিরের বন্ধু। সাব্বিরের সুপারিশে গত মার্চ মাসে সেতুতে শ্রমিক হিসেবে কাজ নেন হোসেন সেখ।
তবে হোসেনের কাজ ভালো না হওয়ায় তাকে মাত্র ১৪দিন পরে কাজ থেকে বাদ দেন চীনা নাগরিক প্যান ইয়াংজুন। এ সময় হোসেন তার কাজে ব্যবহৃত হেলমেটটি নিয়ে যায়। পরবর্তী মাসে বেতন দেয়ার সময় প্যান ইয়াংজুন হেলমেট বাবদ ৫০০ টাকা কেটে রাখেন। এ ক্ষোভ থেকে চীনা নাগরিক প্যান ইয়াংজুনের কাছ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে হোসেন।
ডিআইজি জানান, গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে প্যান ইয়াংজুন শ্রমিকদের বেতন দিতে ব্যাগে করে দুই লাখ ৫৩ হাজার ২৩০ টাকা নিয়ে বাইসাইকেলে করে চায়না ব্যারাকের বাসস্থান থেকে সেতুর নির্মাণ কাজের স্থলের দিকে যাচ্ছিলেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী টাকার ব্যাগ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে প্যান ইয়াংজুন বাধা দেন। তখন হোসেন তাকে ছুরিকাঘাত করে টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় লাও প্যান ইয়াংজুনকে পিরোজপুর জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ এ ঘটনার পর ওইদিন রাতে অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন হিসেবে পিরোজপুর সদর উপজেলার শারিকতলা-ডুমুরিতলা ইউনিয়নের গুয়াবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তার সেখের ছেলে সিরাজ সেখ (৩০) এবং পিরোজপুর পৌরসভার কুমারখালী গ্রামের বাবুল সেখের ছেলে রানা সেখকে (২৮) আটক করে।
পরবর্তীতে তদন্ত শেষে গত ১২ অক্টোবর সেতুতে কর্মরত শ্রমিক সাব্বিরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যার ঘটনা এবং তার বন্ধু হোসেনের কথা পুলিশকে জানায়। ৯ হাজার টাকা ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে হোসেন সব দোষ স্বীকার করে গত ১৯ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক