ঢাকা ৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৪০ অপরাহ্ণ, জুন ৩০, ২০২৫
বরগুনা জেলার উপকূলীয় উপজেলা আমতলী-তালতলী যোগাযোগের একমাত্র আঞ্চলিক সড়কটির বেহাল দশা। ৩৫ কিলোমিটার সড়কে হাজার হাজার গর্ত ও খানাখন্দের ভরপুর হয়ে আছে। এতে উপকূলীয় দুই উপজেলার অন্তত লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, আমতলী-তালতলীর ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার উপকূলীয় আঞ্চলিক সড়ক। দুই উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এ সড়কটি। এ সড়ক দিয়ে লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত। এ ছাড়া সোনাকাটা ইকোপার্ক ও ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। ওই সড়কের ২৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে হাজার হাজার গর্ত ও খানাখন্দে ভরপুর। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে সোনাকাটা ইকোপার্ক পর্যটকদের ভ্রমণ বন্ধ রয়েছে। এতে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। ওই সড়কের মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা সেতু পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার, কড়াইবাড়িয়া বাজার থেকে হরিণবাড়িয়া সেতু পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার এবং তালতলী সেতু থেকে ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়ক গর্ত ও খানাখন্দে ভরপুর। ২০-৩০ গজ দূরত্বে রয়েছে বড় বড় খানাখন্দ।
স্থানীয়রা বলছেন, এ সড়ক যেন রীতিমতো ডোবায় পরিণত হয়েছে। গর্তে গাড়ি আটকে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। খানাখন্দের কারণে সড়কটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই খানাখন্দ সড়ক দিয়ে যানবাহন ও মানুষ যাতায়াত করছে।
সরেজমিন খা গেছে, সড়কের ইট-পাথরের সুরকি বের হয়ে মাটি উঠে গেছে। গর্তে গাড়ির চাকা ফেঁসে যাচ্ছে। কাদা মাটিতে মিশে সড়ক একাকার হয়ে গেছে। সড়কের গর্তগুলো ছোট আকারের ডোবার সমান।
তালতলী উপজেলার ব্যবসায়ী মো. শামীম পাটোয়ারী বলেন, সড়ক যেন হাজারো খানাখন্দের সমাহার। সড়ক দিয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পরেছে। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
তারিকাটা এলাকার শহীদুল ইসলাম ও বাহাদার বলেন, এক বছর ধরে সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের লোকজন দেখেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।
আড়পাঙ্গাশিয়া বাজারের ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির বলেন, সড়ক নির্মাণের দুই বছরের মাথায় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। সড়ক দিয়ে গাড়ি ও মানুষ চলাচলে খুবই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত সড়ক মেরামতের দাবি জানান তিনি।
মোটরসাইকেলচালক নজরুল ইসলাম, রুবেল মিয়া ও শাহ আলম তালুকদার বলেন, সড়কের এমন বেহাল দশা গাড়ি চালানো মুশকিল। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি জানান তাঁরা।
বাসচালক মজিবুর রহমান ও আবদুস সালাম বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারণে যানবাহন চলাচল করতে সমস্যা হয়।
তালতলী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কড়াইবাড়িয়া বাজার থেকে হরিণবাড়িয়া পর্যন্ত সড়কের খুবই খারাপ অবস্থা। আগামী অর্থবছরের প্রথম ধাপে এ সড়ক সংস্কার করা হবে। তিনি আরও বলেন, তালতলী থেকে ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে পর্যন্ত সড়কটি ওই অর্থবছরের দ্বিতীয় ধাপে সংস্কার করব।
আমতলী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা পর্যন্ত আট কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। আগামী অর্থবছরের বাজেটে সংস্কার প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।
বরগুনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘ওই সড়কের বিষয়টি আমি জেনেছি। সংস্কার প্রকল্পের আওতায় আনতে কাজ চলছে। ২৪ কিলোমিটার সড়ক একসঙ্গে সংস্কার করা সম্ভব হবে না। তবে পর্যায়ক্রমে আসছে অর্থবছরে ওই সড়ক সংস্কার করা হবে।’
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক