ঢাকা ১১ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:২৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ১২, ২০২১
এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে পেঁয়াজের দাম বেশি বেড়েছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে টানা বাড়ছে মুরগির দাম। প্রধান খাদ্যপণ্য চাল ও ভোজ্যতেল আগে থেকেই চড়া। এ ছাড়া গুঁড়া দুধের দামও বাড়তি। রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
দেশি পেঁয়াজের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। এরপরও বাড়তি দাম গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
গতকাল রাজধানীর মিরপুর-১নং বাজারে দেখা যায়, প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় উঠেছে। আমদানি পেঁয়াজও ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও এই বাজারের দেশি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ছিল। আমদানি পেঁয়াজ তখন ২০ থেকে ২৫ টাকায় পাওয়া গেছে। আর দুই সপ্তাহে আগে যথাক্রমে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা ও ১৮ থেকে ২২ টাকায় বিক্রি হয়। খোলা ট্রাকে টিসিবির পেঁয়াজ ১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারেও খুচরায় পেঁয়াজের দামে একই পরিস্থিতি। এই বাজারের ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান বলেন, এখন আমদানি পেঁয়াজের সরবরাহ কম। দেশি পেঁয়াজও সংরক্ষণ হচ্ছে। এই সময়ে চাহিদা বাড়ছে। ফলে এ কারণে বাজারে দাম বাড়ছে।
তবে এসব যুক্তি মানতে রাজি নন ক্রেতারা। তারা বলছেন, মৌসুমের এই সময়ে বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজের সরবরাহ থাকার পরও ব্যবসায়ীরা রমজানের বাজার ধরতে আগে থেকেই দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা করছেন।
শুধু পেঁয়াজ নয়, মুরগির দামও বেসামাল। যদিও দেশের মানুষের প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে বড় ভূমিকা রাখছে মুরগি। সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। বাজারে এখন ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। লেয়ার ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি। আর দেশি মুরগি এখন গরুর মাংসের দাম ছুঁই ছুঁই। দেশি মুরগির কেজি এখন ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা। বাজারে গরুর মাংস ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকা। আর খাসির মাংস ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় পৌঁছেছে। এক মাস আগেও ব্রয়লার মুরগি পাওয়া যেত ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে। তখন লেয়ার মুরগি ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। সোনালি মুরগি ছিল ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি। এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে সোনালি মুরগি ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ল।
মিরপুরের উত্তর পীরেরবাগ বাজারের ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, এই সময়ে পারিবারিক, সামাজিক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক অনুষ্ঠান আয়োজন বেড়েছে। এ কারণে প্রতিদিনই মুরগির দামও বাড়ছে।
রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মিরপুরের বাসিন্দা মো. আলামিন বলেন, বেতনের টাকায় সংসার চালানো দায়। বাজার করতে গেলে হিসাব মিলছে না। হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যতালিকা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম প্রায় ২৭ শতাংশ এবং আমদানি পেঁয়াজ ৬৭ শতাংশ বেড়েছে। মুরগির দাম এক মাসে ২১ থেকে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া চাল ও ভোজ্যতেলের দাম কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা বেড়েছে। আর গুঁড়া দুধের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে।
চালের বাজারে মোটা ৪৬ থেকে ৫০, মাঝারি ৫২ থেকে ৫৮ টাকা কেজি। মিনিকেটের কেজি ৬০ থেকে ৬৮ ও নাজিরশাইল ৬২ থেকে ৭০ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের লিটার এখন ১১৬ থেকে ১২১ টাকা। বোতলজাত সয়াবিনের দাম প্রতি লিটার ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের নির্ধারিত দাম ১১৫ টাকা। প্রতি লিটার সুপার পাম তেল লিটারে ৩ টাকা বেড়ে মানভেদে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গুঁড়া দুধের কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ডানো ব্র্যান্ডের গুঁড়া দুধ এখন ৬০০ থেকে ৬৩০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ডিপ্লোমা ব্র্যান্ডের দুধ।
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক