বাড়ি ঘেরাও করে মা-ছেলেসহ ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ২:২২ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩, ২০২৫

বাড়ি ঘেরাও করে মা-ছেলেসহ ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা
নিউজটি শেয়ার করুন

 

 

 

কুমিল্লার মুরাদনগরে মাদক কারবার ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে একটি বাড়ি ঘেরাও করে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে এলাকাবাসী। তাঁদের মধ্যে দুজন নারী একজন পুরুষ। এ ঘটনায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার করইবাড়ী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

 

 

নিহত ব্যক্তিরা হলেন করইবাড়ী গ্রামের রুবি আক্তার (৪৫), তাঁর ছেলে রাসেল (২৫) এবং আরেক নারী জোনাকী (৩২)। গুরুতর আহত অবস্থায় রুবির অপর স্বজন রোমা আক্তারকে (৩৫) কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

 

 

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা, ডাকাতি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মুরাদনগর, নবীনগর ও বাঙ্গরা বাজার থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাঁরা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ।

 

 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রুবি আক্তার ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে মাদক কেনাবেচা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী হামলা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিলেন। তাঁদের কারণে এলাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। বহুবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

 

 

বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে তাঁদের বাড়ি ঘেরাও করে। পরে উত্তেজিত জনতা সংঘবদ্ধভাবে তাঁদের ওপর হামলা চালায় এবং লাঠিসোঁটা ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান এবং একজন গুরুতর আহত হন।

 

 

খবর পেয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। আহত ব্যক্তিকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।

 

 

ওসি মাহফুজুর রহমান আরও জানান, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি, তবে তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

 

এ ঘটনার পর থেকে করইবাড়ী গ্রামে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত রাখতে টহল জোরদার করেছে এবং এলাকাবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ