এনসিপির এক গ্রুপকে কোপালেন অন্য গ্রুপ

প্রকাশিত: ৪:৩৫ অপরাহ্ণ, জুন ২৬, ২০২৫

এনসিপির এক গ্রুপকে কোপালেন অন্য গ্রুপ
নিউজটি শেয়ার করুন

 

 

মাদারীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক কর্মী সভায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে এনসিপিরই অপর পক্ষের কয়েকজন কর্মী।

 

 

এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (২৫ জুন) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মাদারীপুর সদর থানার সামনে অবস্থান নেন এবং দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। সুষ্ঠু বিচার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা। তবে ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

 

 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি এনসিপির ৩১ সদস্যের জেলা সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিকে ঘিরে জেলা পর্যায়ের কিছু নেতা—বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহ ও আহ্বায়ক নেয়ামত উল্লাহ—তীব্র আপত্তি জানান এবং কমিটি প্রত্যাখ্যান করেন। এর জবাবে সদর উপজেলা পর্যায়ে পৃথকভাবে ২৬ সদস্যের আরেকটি কমিটি গঠন করে মাসুম বিল্লাহদের পক্ষ।

 

 

এই নবগঠিত উপজেলা কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত কর্মী সভায় অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয় মাসুম বিল্লাহকে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন জেলা এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী মো. হাসিবুল্লাহ। তাঁর অনুসারী রাতুল হাওলাদার ও মো. আদিল মাহামুদ (টুটুল) সহ আরও কয়েকজন মাসুম বিল্লাহর ওপর হামলা চালায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে গুরুতর জখম করে।

 

 

পরে তাকে প্রথমে মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

 

 

ঘটনার পর কেন্দ্রীয় এনসিপি তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ হিসেবে মাদারীপুর জেলা ও সদর উপজেলা সমন্বয় কমিটি স্থগিত করে এবং অভিযুক্ত দুই সদস্য—আব্দুল্লাহ আদিল ও রাতুল হাওলাদারকে বহিষ্কার করে। বিষয়টি বুধবার রাত ২টার দিকে এনসিপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত পৃথক দুটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেন দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সিফাত।

 

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের অভিযোগ, কমিটি গঠন নিয়ে মাসুম বিল্লাহ ও মো. হাসিবুল্লাহর মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বই এই হামলার মূলে। মাসুম বিল্লাহকে জেলা বা উপজেলা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত না করায় উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। গত কয়েকদিন ধরেই দুই পক্ষের মধ্যে হুমকি-ধমকি চলছিল।

 

 

ঘটনার বিষয়ে সদ্য স্থগিত হওয়া কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী মো. হাসিবুল্লাহ বলেন, ‘অপরাধী যেই হোক, তাকে শাস্তি পেতেই হবে। কেন্দ্রীয় কমিটি সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা চাই, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হোক।’

 

 

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘হামলার সঠিক কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে। ইতোমধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে পারব।’


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ