গরমে প্রশান্তি ঝালকাঠির শীতল পাটি

প্রকাশিত: ৩:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০২৩

নিউজটি শেয়ার করুন

 

নবকন্ঠ ডেস্ক, বরিশাল:: ঝালকাঠির বহুকালের পুরোনো ঐতিহ্য শীতলপাটি। একটা সময় ছিল যখন গ্রামের বাড়িতে অতিথি এলে বসতে দেওয়া হতো এ শীতলপাটিতে। গৃহকর্তার বসার জন্যও ব্যবস্থা থাকতো এই বিশেষ ধরনের পাটি। বর্তমানেও হিন্দুদের বিয়ের অন্যতম অনুষঙ্গ শীতলপাটি। গরমকালে শীতলপাটির কদর বেশি। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের দুপুরে শীতলপাটি দেহে-মনে শীতলতা আনে।

 

 

 

দেশের যে কয়টি জেলায় শীতলপাটি তৈরি হয় তার মধ্যে ঝালকাঠি অন্যতম। এ জেলার রাজাপুর উপজেলার হাইলাকাঠি, ডহশংকর সাংগর, জগন্নাথপুর গ্রামের প্রায় ৩০০ (তিনশত) পরিবার শীতলপাটি তৈরি ও উপকরণ পাইত্র্যা চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এছাড়া রাজাপুর সদর, নলছিটির তিমিরকাঠি, কামদেবপুর প্রভৃতি জায়গায় শীতলপাটি তৈরি হয়।

 

 

 

নলছিটি উপজেলার গোপালপুর কামদেবপুর এলাকার প্রায় ৫০ পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে শীতলপাটি বিক্রি করে। তাদের একমাত্র পেশা হচ্ছে পাটি তৈরি করা। সেখানকার তপন পাটিকর জানান, তাদের পরিবারের পুরুষদের পাশাপাশি নারীরা পাটি তৈরির কাজে সহযোগিতা করেন। পাটি বিক্রি করেই চলে তাদের সংসার।

 

 

কাজল পাটিকর জানান, ৫ জনের পরিবারে একমাত্র আয়ের উৎস হচ্ছে শিতলপাটি বিক্রি আর সেই বিক্রির আয়দিয়েই চলে তাদের পরিবারের ভরণ পোষণ।

 

 

চন্দন পাটিকর বলেন, শিতলপাটি তৈরির কাজ ১২ মাসই কম বেশি থাকে, তবে গরমের মৌসুমে সব চাইতে বেচা বিক্রি বেশি হয়। তাই আমাদের কাজের চাপ খুব বেশি।

 

 

সুজন চন্দ্র পাটিকর বলেন, বর্তমানে শীতলপাটির বাজার মোটামুটি ভালো। তবে পাটি তৈরি করতে একজন লোকের ২ থেকে ৩দিন সময় লেগে যায়, সে তুলনায় মজুরি কম পরে যায়। প্রকারভেদে প্রতিটি শীতলপাটির দাম ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত পাইকারি বিক্রি হয়ে থাকে। তাতে করে একজন পাটিকর বছরে ১ লাখ থেকে দের লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকে।

 

 

নলছিটি উপজেলার কামদেবপুর এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম দোলন বলেন, এখানকার বসবাসকারী পাটিকররা শিতলপাটি তৈরি করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।

 

 

৫ নম্বর সুবিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ. গফফার খান জানান, পাটিকরদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরকারি সুযোগ সুবিধা যে যতটুকু পেতে পারে তা আমরা দিয়ে থাকি। তাদের ব্যবসা প্রসারের লক্ষ্যে পাটিকরদের সঙ্গে আলাপ করে স্থানীয়ভাবে কিছু করার উপায় থাকে তা আমরা করার চেষ্টা করব।

 

 

নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাত আরা নাহিদ বলেন, শীতলপাটির তৈরির কাজের সঙ্গে যে পরিবারগুলো জড়িত তাদের প্রয়োজনে যে কোনো সহযোগিতা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করার চেষ্টা করা হবে। স্থানীয় চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের শীতলপাটি বিক্রিরও প্রচারণা এবং কিভাবে সম্প্রসারণ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।

 

 

ঝালকাঠি বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক শাফাউল করিম বলেন, তারা যদি আমাদের কাছে আসেন তাহলে ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে বিসিক থেকে ঋণ ও পরমর্শ সহায়তা দেওয়া হবে।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ