ঢাকা ৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:০৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২২
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় স্কুল ছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণের ঘটনার আসামি আলোচিত সিরিয়াল রেপিস্ট মো. শামিম হোসেন মৃধাকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব বলছে, গ্রেপ্তার শামিম একজন সিরিয়াল রেপিস্ট। সে ঢাকা বাবু বাজার ও গাবতলী এলাকায় সিএনজি এবং প্রাইভেটকার চালক হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন এলাকায় সে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, বরিশাল ও খুলনা এলাকায় আত্মগোপনে চলে যেত। আত্মগোপনে থাকাকালীন সময়ও একাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৮ এর একটি আভিযানিক দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
শুক্রবার (১৭ জুন) দুপুরে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন রাজধানীর কাওরান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
র্যাব জানায়, গত ১১ জুন পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার এক স্কুল ছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ১২ জুন ভিকটিমের মা বাদী হয়ে ভান্ডারিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ধর্ষককে গ্রেপ্তারের দাবীতে ভিকটিমের স্কুল শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা মানবন্ধন করে। এর ফলশ্রুতিতে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকে জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব কর্মকর্তা খন্দকার মঈন জানায়, পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়ায় স্কুল পড়ুয়া ঐ ছাত্রীকে পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ধারালো অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার পর ফেলে রেখে পালিয়ে যায় এবং ঘটনার পরপরই ঢাকায় আত্মগোপন করে।
র্যাব মুখপাত্র বলেন, গ্রেপ্তার শামিম একজন সিরিয়াল রেপিস্ট। বিগত ২০১৫ সালে ২৬ জানুয়ারি ভান্ডারিয়া উপজেলার এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে গভীর রাতে ঘরের দরজা ভেঙ্গে হামলা করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ২০১৭ সালে ১ নভেম্বর একই উপজেলার মাদ্রাসার ছাত্রীকে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে রামদা দিয়ে হত্যার ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে। এছাড়াও ২০২১ সালে ১০ অক্টোবর আরেক মাদ্রাসার ছাত্রীকে যৌনপীড়ন করে।
তিনি বলেন, এসব ঘটনায় ভান্ডারিয়া থানায় বিভিন্ন সময়ে মামলাও হয় তার নামে। এছাড়াও বেশকয়েকটি ধর্ষণের মত অপরাধ সংঘঠিত করেছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু ভিকটিমরা লোকলজ্জা ও সামাজিক মর্যাদাহানির ভয়ে মামলা করা থেকে বিরত থাকে।
খন্দকার মঈন বলেন, গ্রেপ্তার শামিম ঢাকা বাবু বাজার ও গাবতলী এলাকায় সিএনজি এবং প্রাইভেটকার চালক হিসেবে কাজ করে। ১৬ বছর বয়সে সে এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, মাদক সেবন ও মাদক কেনাবেচার মাধ্যমে অপরাধ জগতে প্রবেশ করে। বিভিন্ন এলাকায় সে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, বরিশাল ও খুলনা এলাকায় আত্মগোপনে চলে যেত। আত্মগোপনে থাকাকালীন সময়ও একাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটায়। সে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার এড়াতে এক স্থানে বেশিদিন অবস্থান করত না।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার শামিমের নামে বিভিন্ন থানায় ধর্ষণ, হত্যাচেষ্টা ও মাদকসহ অন্যান্য অপরাধের সর্বমোট ১০টিরও বেশি মামলা রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। সে এর আগেও ধর্ষণ ও অন্যান্য মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে ৪-৫ বার কারাভোগ করেছে।
গ্রেপ্তার শামিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৬টি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে বলেও তথ্য পাওয়া যায়।
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক