বরিশালে ৩ লাখেরও বেশি জেলে পাচ্ছেন চাল সহায়তা

প্রকাশিত: ৩:৫১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩, ২০২১

নিউজটি শেয়ার করুন

 

এবারে ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৪ অক্টোবর (সোমবার) থেকে ২৫ অক্টোবর (সোমবার) পর্যন্ত। অর্থাৎ রোববার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে দেশের নদ-নদী ও বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে।

 

গত বছর এই নিষেধাজ্ঞা ছিল ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত, কিন্তু এবার তা এগিয়ে আনা হয়েছে। আর নিষিদ্ধ এ সময়ে ইলিশ শিকার, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ ও ক্রয়-বিক্রয় আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

 

মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করা হলে জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এ সময় জেলেরা ২০ কেজি করে চাল সহায়তা পাবেন।

 

এই দপ্তরের হিসfব অনুযায়ী বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় মোট ৬ লাখ ৮৬ হাজার ১৮ জন জেলে রয়েছে, এরমধ্যে ইলিশ আহরণকারী জেলের সংখ্যা ৩ লাখ ৪৩ হাজার ১১৯ জন আর জাটকা আহরণকারী জেলের সংখ্যা ৩ লাখ ৪২ হাজার ৮৯৯ জন। এরমধ্যে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ৩ লাখ ৭ হাজার ১২৪ জেলের অনুকূলে ৬ হাজার ৯৪২ দশমিক ৪৮ মেট্রিক টন ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিংয়ের (ভিজিএফ) চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিভাগীয় মৎস্য দপ্তর।

 

যেখানে বরিশাল জেলায় ৫১ হাজার ৭শ জেলে পরিবারকে ১ হাজার ৩৪ মেট্রিক টন, পিরোজপুর জেলায় ১৭ হাজার ৭শ জেলে পরিবারকে ৩৭৪ মেট্রিক টন, পটুয়াখালী জেলায় ৬৩ হাজার ৮শ জেলে পরিবারকে এক হাজার ২৭৬ মেট্রিক টন, ভোলা জেলায় এক লাখ ৩২ হাজার জেলে পরিবারকে দুই হাজার ৬৪০ মেট্রিক টন, বরগুনা জেলায় ৩৭ হাজার ৭৪ জেলে পরিবারকে ৭৪১ দশমিক ৪৮ মেট্রিক টন এবং ঝালকাঠি জেলায় তিন হাজার ৮৫০ জেলে পরিবারের জন্য ৭৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

 

মৎস্য অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগের উপ-পরিচালক আনিছুর রহমান তালুকদার জানান, ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ মৌসুমে কেউ মাছ আহরণে নদীতে নামলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এছাড়া প্রতিটি উপজেলায় জেলেদের জন্য বরাদ্দ করা চাল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি জেলে পরিবার ২০ কেজি করে চাল পাবে। প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এসব চাল উপজেলা মৎস্য অফিসের তালিকাভুক্ত জেলেদের ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে দেবেন। এছাড়া ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর ২ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন এই ৮ মাস জাটকা ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

 

তিনি বলেন, সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণে গত কয়েক বছরে দেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। আমরা এ ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।

 

এদিকে ইলিশ গবেষকেরা বলছেন, ইলিশ মূলত সারা বছরই ডিম দেয়। তবে, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এই দুই মাসের চারটি অমাবস্যা-পূর্ণিমায় ডিম বেশি পাড়ে। তাই ইলিশের জোগান বাড়াতে এই সময় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এই সময়ে ইলিশ ধরা থেকে বিরত রাখতে পারলে মা ইলিশ রক্ষা নিরাপদে নদীতে ডিম ছাড়তে পারবে। এই ডিম রক্ষা করতে পারলে তা নিষিক্ত হয়ে জাটকার জন্ম হবে। সেই জাটকা রক্ষা করা গেলে দেশে বড় আকারের ইলিশের উৎপাদন বাড়বে।

 

গতবছর ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞাকালে ১ হাজার ২৬টি মোবাইল কোর্টে ও ২ হাজার ৫০৫টি অভিযানে ১ হাজার ২৪৯টি মামলা করা হয়। যেখানে আইন অমান্য করায় ১ হাজার ১৩৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও ২০ লাখ ৮২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ