লিড নিউজ

স্মার্ট কার্ড না থাকায় পাঁচ শতাধিক প্রার্থীর স্বপ্নভঙ্গ!

By admin

November 16, 2021

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থীদের সঙ্গে স্মার্টকার্ড না থাকার কারণে প্রায় পাঁচ শতাধিক প্রার্থীকে প্রাথমিক পর্যায়ে ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করে পুলিশ লাইন্স থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বাদ পড়া প্রার্থীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

 

রোববার সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ লাইন্সে কনস্টেবল পদে বাছাই কার্যক্রম চলে।

 

জানা যায়, গত ১০ সেপ্টেম্বর কনস্টেবল পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় পুলিশ বিভাগ। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের আবেদনের শেষ তারিখ ছিলো ৭ অক্টোবর। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় কনস্টেবল পদে ৫০ জন পুরুষ এবং ৯ জন নারী সদস্য নেয়া হবে। পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী আজ সকাল ৮টা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ লাইন্সে ট্রেইনি রিক্রুট পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হয়। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রার্থীরা এসে জড়ো হন পুলিশ লাইন্সে। পরীক্ষার শুরুতেই বাছাই পর্বে প্রার্থীদের সঙ্গে স্মার্ট কার্ড না থাকার অজুহাতে অন্তত পাঁচ শতাধিক প্রার্থীকে প্রাথমিকভাবে অযোগ্য ঘোষণা করে বাদ দেয়া হয়।

 

একাধিক নিয়োগ প্রত্যাশী অভিযোগ করে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় স্মার্ট কার্ডের বিষয়টি উল্লেখ ছিলনা। এসময় অনেক বাদপাড়া প্রার্থীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

 

নিয়োগ প্রত্যাশী আখাউড়া পৌর এলাকার রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা কৌটায় পরীক্ষায় অংশ নিতে এসেছিলেন। পরীক্ষা দিতে আসার পর তার কাছে স্মার্ট কার্ড আছে কি না তা জিজ্ঞেস করেন একজন কর্মকর্তা। পরে ওই কর্মকর্তাকে অনলাইন কপি দেওয়ার পর তার প্রবেশপত্রে ‘অযোগ্য’ সিল মেরে তাকে পুলিশ লাইন থেকে বের করে দেয়া হয়। কেন তাকে বের করা হচ্ছে জিজ্ঞেস করলে তাকে বলা হয়, তোমার স্মার্ট কার্ড নেই।

 

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নিয়োগপত্রে কোথাও লিখা ছিলনা যে স্মার্ট কার্ড আনতে হবে। শুধু উল্লেখ ছিল এনআইডি কার্ডের মূল কপি সঙ্গে আনতে হবে। আর সেটা যদি না থাকে, তাহলে মা-বাবার এনআইডি কার্ডের মূল কপি নিয়ে আসতে হবে।

 

নিয়োগ প্রত্যাশী বাঞ্ছারামপুর উপজেলার কদমতলী গ্রামের ঈমান মিয়া বলেন, আমার কাছে এনআইডি ছিল। স্মার্ট কার্ড নেই। এই কথা বলার পর আমাকে অযোগ্য ঘোষণা করে পুলিশ লাইন থেকে বের করে দেয়া হয়।

 

তিনি বলেন, বাবা-মায়ের অনেক স্বপ্ন ছিলো পুলিশ হব। জনগণের সেবা করব। আজ আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল।

 

সরাইল উপজেলা থেকে পরীক্ষা দিতে আসা সৌরভ সরকার ও অপু দাস বলেন, এতো কষ্ট করে পরীক্ষা দিতে এসেছি। কিন্তু স্মার্ট কার্ড না থাকার কারণে আমাদেরকে অযোগ্য বলে বের করে দেয়া হয়েছে। তারা বলেন, আমাদের স্মার্ট কার্ড নেই। আমাদের এলাকায় স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয়নি।

 

কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা ইয়ার খান, নবীনগর উপজেলার রহমতউল্লাহ সহ আরো অনেকে একই অভিযোগ করেন।

 

অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে এসপি মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, তাদের অভিযোগ সঠিক নয়। অনেকের কাছে এনআইডির ফটোকপি ছিল। আবার অনেকের কাছে ছিল না। আবার বাদ পড়ার পর অনেকে বাড়ি থেকে নিয়ে এসে নানা অজুহাতে আপত্তি করছে। যাদেরকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে তাদের কারো কাছে মূল আইডি কার্ড ছিল না। নিজে উপস্থিত থেকে সবকিছু তদারকি করেছি। বাছাইপর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও ঢাকা থেকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে বির্তকের কোনো অবকাশ নেই।