ঢাকা ১১ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:১১ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৮, ২০২২
বরিশাল, নবকন্ঠ ডেস্ক :: দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তি, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ নানা দাবিতে দেশের বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করছে বিএনপি। একাধিক বিভাগের মতো ঢাকায় এই দফার শেষ সমাবেশেও জায়গা নিয়ে দোটানার মধ্যে পড়েছে দলটি। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচি পালনে বিএনপি অনড় থাকলেও সরকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে অনুমতি দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে।
যদিও ঢাকার মধ্যে বিএনপিকে অনুমতি দেওয়া হবে না এমন বক্তব্যও ছিল সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের কণ্ঠে। সে অবস্থান থেকে সরে এসে এখন সোহরাওয়ার্দীতে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে অনড় সরকার। সোহরাওয়ার্দীর বাইরে অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করলে সরকার কঠোর হবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সবশেষ রোববার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের এক সভায়ও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে জনভোগান্তির কথা বিবেচনা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়া ঢাকায় বিএনপিকে সমাবেশ করতে না দেওয়ার বিষয়ে জোরালো আলোচনা হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এখন কঠোর অবস্থান দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত কর্মসূচি পালনের স্বার্থে বিএনপিও নয়াপল্টন ছাড়তে পারে বলে গুঞ্জন আছে। এতে দলটির নেতাকর্মীদের অনেকের সায় আছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় একজন সহসম্পাদক রোববার রাতে বলেন, সমাবেশের বাইরে যেহেতু কোনো চিন্তা নেই তাহলে সোহরাওয়ার্দীতে আপত্তি করার কি আছে? আমার তো মনে হয় এই সুযোগটা নেওয়া উচিত।
এর আগে ঢাকায় সমাবেশ করতে বিএনপি গত ১৫ নভেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশকে (ডিএমপি) অনুমতি চেয়ে চিঠি দেয়। দলটির দায়িত্বশীল নেতারা ডিএমপির কাছে দেওয়া আবেদনে শুধু নয়াপল্টনের কথা বলেছেন বলে দাবি করছেন। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দাবি করেছেন, আবেদনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানও চেয়েছে বিএনপি।
এদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দেওয়ার কথা সরকারের পক্ষ থেকে বলার পর বিএনপি নিজেদের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা করে। সেখানে তাদের কর্মসূচির ঠিক আগের দিন অর্থাৎ (৮ ও ৯ ডিসেম্বর) ছাত্রলীগের সমাবেশ থাকায় ঘোর আপত্তি জানানো হয়। দলীয় ফোরামের বৈঠকে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন, সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে ছাত্রলীগের সম্মেলনের পরদিন বিএনপিকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তবে এমন আপত্তির বিষয়টি আঁচ করতে পেরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন দুই দিন এগিয়ে আনা হয়েছে।
রোববার জানানো হয়, ৬ ডিসেম্বর হবে সম্মেলন। ফলে সম্মেলনের পরও তিনদিন হাতে থাকায় বিএনপি চাইলে প্রস্তুতি সেরে নিতে পারবে।
আওয়ামী লীগ ও সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সূত্র বলছে, বিএনপি ১০ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চাইলে মঞ্চ তৈরি করার জন্য তাদের সময় প্রয়োজন। সেখানে ৮ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের যে সম্মেলন নির্ধারিত আছে, তা বহাল থাকলে বিএনপির সমাবেশের প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হবে না। এ জন্য ছাত্রলীগের সম্মেলন এগিয়ে আনা হয়েছে।
এদিকে রোববার বিকেলে আওয়ামী লীগের বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বিএনপি বড় জমায়েত করবে তাতে আপত্তি নেই। তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করুক। দলীয় কার্যালয়ের সামনে সর্বোচ্চ ৪০ থেকে ৫০ হাজার লোক ধরবে। তাদের বেশি লোকের প্রস্তুতি, সে জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কেন নয়?
জ্বালানি তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপক্ষে সরকারের দাবিতে বিভাগীয় (দলের সাংগঠনিক বিভাগ) পর্যায়ে সমাবেশ করছে বিএনপি।
ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর ও সিলেট বিভাগীয় সমাবেশ সম্পন্ন করেছে দলটি। এরই অংশ হিসেবে আজ ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় সমাবেশ করেছে বিএনপি এবং ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে গণসমাবেশ করবে দলটি। সবশেষ ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক