টক অব দ্যা টাউন চিত্রনায়িকা পরীমনি। চায়ের দোকান থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সবখানেই আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। পরীমনিকাণ্ডে এরই মধ্যে প্রধান আসামিসহ পাঁচজনকে আইনের আওতায় এনেছে পুলিশ। তবে পরীমনির বিরুদ্ধেও ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগে একটি জিডি করা হয়।
বুধবার রাজধানীর গুলশান থানায় পরীমনির বিরুদ্ধে এই জিডি করে অল কমিউনিটি ক্লাব কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।
ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমনিকাণ্ডের পর আরো কিছু বিষয় খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ। নিয়ম ভেঙে কয়েকটি সোশ্যাল ক্লাবে মাঝরাতে এই নায়িকার যাতায়াত ও মদ্যপানের খোঁজখবর করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
এরই মধ্যে গুলশানের একটি অভিজাত ক্লাবের বার বয়ের বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করেছে বনানী থানা পুলিশ। এছাড়া আরো কয়েকটি অভিজাত ক্লাবের কর্মকর্তারা পুলিশকে জানিয়েছেন, মধ্যরাতে নিয়ম ভেঙে পরীমনির জন্য বার খোলা রাখতে হয়। মদের আসর বসানোর গল্পও পুলিশকে বলছেন এসব ক্লাব কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, বোট ক্লাবকাণ্ডের আগের রাতে গুলশান অল কমিউনিটি ক্লাবের দলবল নিয়ে ঢোকেন আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি। মধ্যরাতে সেখানে তিনি ভাঙচুর করেন। এ ঘটনার তদন্তে বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে গুলশান থানা পুলিশ।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ৮ জুন রাতে বোট ক্লাবকাণ্ডের তদন্তে নেমে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরোচ্ছে। তার ব্যাপারে জানাতে ঢাকার একাধিক সোশ্যাল ক্লাবের কর্মকর্তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন।
পুলিশ ও গোয়েন্দাদের ক্লাব কর্মকর্তারা জানান, পরীমনি তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমিসহ কয়েকজন যুবক-যুবতী নিয়ে প্রায় রাতেই অভিজাত ক্লাব ও তারকা হোটেলে ঘুরে বেড়াতেন। তাদের সঙ্গে নিয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত মদ খেতেন। এক্ষেত্রে প্রায় রাতেই তার কারণে ক্লাবের আইন ভাঙা হতো। বিশেষ করে হাফপ্যান্ট পরে তার সঙ্গী হওয়া জিমি ড্রেসকোডের তোয়াক্কা করতেন না কখনোই। এক ক্লাবে সময় কাটিয়ে তিনি যেতেন আরেক ক্লাবে।
গুলশান পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ৩ জুন রাত ১২টার পর পরীমনি, তার সাবেক প্রেমিক তামিম হাসান ও দুটি বেসরকারি টেলিভিশনের দুজন কর্মকর্তা পরিচয়ধারীকে নিয়ে গুলশানের একটি অভিজাত ক্লাবে যান। তখন তারা মদ্যপ ছিলেন। ক্লাবে ঢুকে পরীমনি ও অন্যরা বার ব্যবহার করতে চান। বার বয় জালাল এতে অসম্মতি জানালে পরীমনি তার গালে চড় মারেন। ক্লাব কর্মকর্তারা বেসামাল আচরণের প্রতিবাদ করলে তিনি নিজেই পুলিশে কল করেন। পরে ঘটনাস্থলে যায় গুলশান থানা পুলিশের দুটি পিকআপ ভ্যান।
পরে তারা বুঝিয়ে পরীমনিকে বাসায় পাঠান। এ খবর পুলিশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। সীমানা ঘেঁষা এলাকা হওয়ায় বুধবার বনানী থানা পুলিশ ওই ক্লাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বার বয় জালালের কাছ থেকে সেই রাতের ঘটনা জানতে চায়। ক্লাবটির সদস্য (প্রশাসন) এজন্য পুলিশের কাছে সময় চেয়েছেন বলে জানা গেছে।