ঢাকা ৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:০৪ অপরাহ্ণ, মে ২৮, ২০২২
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঘটনার তদন্ত ছাড়াই প্রতিপক্ষের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ.জ.মো. মাসুদুজ্জামান মিলু প্রথম শ্রেণির ঠিকাদারের বিরুদ্ধে একের পর এক চুরির মামলা গ্রহণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ঠিকাদারের কাছ থেকে দাবিকৃত মাসোহারা না পেয়ে এমন ঘটনা ঘটাচ্ছেন।
শনিবার (২৮ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন হয়রানির শিকার ঠিকাদার ফেরদৌস ওয়াহিদ রাসেল। তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলার পশ্চিম শিকারপুর মেসার্স সরদার ইলেকট্রনিকের স্বত্ত্বাধিকারী।
লিখিত বক্তব্যে ফেরদৌস ওয়াহিদ রাসেল বলেন, তার চাচা এনায়েত হোসেন সরদারের সাথে পারিবারিকভাবে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল। এনায়েত হোসেন সরদার তাকে ঘায়েল করতে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি বাসার কেয়ারটেকার দিয়ে থানায় ১৮ হাজার ৫০০ টাকা চুরির অভিযোগ দায়ের করান। ওসি সেই অভিযোগের কোন ধরনের প্রাথমিক তদন্ত না করে সরাসরি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করেন। এছাড়া ১১ মে নিজের জমিতে উত্তোলিত ঘর থেকে মিটার চুরির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একই বাদি আবারও অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগও তদন্ত ছাড়া মামলা হিসেবে গ্রহণ করে তাকে গ্রেফতার করেন ওসি মাসুদুজ্জামান মিলু। গ্রেফতারের পর পুলিশ সদস্যরা হাতকড়া পরিয়ে ছবি তোলেন। পরে ওসি নিজ উদ্যোগে বিভিন্নজনকে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ভাইরাল করান।
ফেরদৌস ওয়াহিদ রাসেল বলেন, আমি পিরোজপুরের প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। আমার মা, ভাই ও বোন ইউরোপে বসবাস করেন। অথচ আমার বিরুদ্ধে একই বাদিকে দিয়ে অভিযোগ আনা হয়েছে সেখানে আমি নাকি সাড়ে ১৮ হাজার টাকা চুরি করেছি। শুধু সেখানেই শেষ নয়, আমার নিজের ঘরের মিটার চুরি আমি নিজে করেছি-এমন মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারাভোগও করতে হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ওসি আ.জ. মো. মাসুদুজ্জামান মিলু পিরোজপুর সদর থানায় যোগ দেওয়ার পরে বিভিন্ন জনের মাধ্যমে আমাকে খবর পাঠাতেন এবং ডেকে মাসোহারা দাবি করতেন। আমি দিতে অস্বীকার করায় তিনি বলেছিলেন, আমাকে এমন ক্ষতি করবেন যেন কারো কাছে মুখ দেখাতে না পারি। আমি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হলেও আমার বিরুদ্ধে একের পর এক চুরির মামলা তদন্ত ছাড়া গ্রহণ করে তার মনে জমে থাকা ক্ষোভের প্রতিশোধ নিচ্ছেন।
ওয়াহিদ রাসেল দাবি করেন, তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। পক্ষান্তরে ওসি মাসুদুজ্জামান মিলুর পরিবার বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয়। ওসির আপন ছোট ভাই বরগুনা জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মুরাদুজ্জামান টিপন। তিনি ওসি হলেও আওয়ামী লীগের নেতাদের সহ্য করতে পারেন না। কোন আওয়ামী লীগের নেতার কাছে বা ব্যবসায়ীর কাছে মাসোহারা চাইলে এভাবে সামাজিক, অর্থনৈতিক নির্যাতন চালান। তিনি এর আগে বাউফল, বাকেরগঞ্জ ও নলছিটি থানা থেকে অপকর্মের দায়ে ক্লোজড হন।
রাসেল বলেন, দাবি অনুসারে মাসোহারা না দেওয়ায় ওসি মাসুদুজ্জামান মিলু আমার পারিবারিক বিরোধকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়ে আমাদের পরিবারকে উৎখাতের চক্রান্ত করছেন। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজির হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। একই সাথে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান।
যদিও অভিযোগের বিষয়ে ওসি আ. জ. মো মাসুদুজ্জামান মিলু দাবি করেন, জমি বিরোধের জের ধরে তার চাচার সাথে বিরোধ আছে। চাচা মামলা দায়ের করলে আমার কিছুই করার নেই। একই বাদি একই অভিযোগে একাধিক মামলা দিতে পারেন কিনা প্রশ্নের জবাবে বলেন, ঘটনাস্থল আলাদা হলে আমি নিতে বাধ্য। ওসি বলেন, আমার ভাই বিএনপির রাজনীতি সঙ্গে জড়িত এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক