পিরোজপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে শুঁটকি ব্যবসা

প্রকাশিত: ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৮, ২০২৩

পিরোজপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে শুঁটকি ব্যবসা
নিউজটি শেয়ার করুন

 

বর্তমানে অনেকেই সুস্বাদু খাবারের তালিকায় শুঁটকি রাখছেন। পিরোজপুরেও দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে শুঁটকি ব্যবসা। বাড়ছে এর উৎপাদন। বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী জেলা হওয়ায় পিরোজপুর জেলায় শুঁটকি ব্যবসার অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এক সময় দক্ষিণাঞ্চলে শুঁটকির প্রচলন কম থাকলেও দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে শুঁটকি। এর ফলে শুঁটকি ব্যবসায় অনেকেই এগিয়ে আসছেন নতুনভাবে।

 

 

শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও বাড়ছে এর চাহিদা। চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দিনদিন বাড়ছে এর সরবরাহ। উৎপাদনও বাড়াতে হচ্ছে সমান তালে। এটি প্রক্রিয়াজাতকরণে কোনো প্রকার কেমিক্যাল ব্যবহার না করায় ও মাছ সুস্বাদু হওয়ায় মানুষ নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা পান। ফলে এখানকার উৎপাদিত শুঁটকি জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। সরবরাহ নিশ্চিত করতে পিরোজপুরের পাড়েরহাটের কেমিক্যালমুক্ত শুঁটকি পল্লীর শ্রমিকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

 

 

জানা যায়, পাঁচ বছর আগে পাড়েরহাটে একটি শেড থেকে শুঁটকি উৎপাদনের যাত্রা শুরু হলেও এখন এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে নয়টিতে। প্রতি বছর এ জেলায় উৎপাদিত হয় প্রায় এক লাখ কেজি শুঁটকি। এর বাজার মূল্য প্রায় সাত কোটি টাকা। বঙ্গোপসাগরের খুব কাছাকাছি থাকায় এবং জেলার চারদিকে নদী থাকায় এ বাজারে প্রচুর মাছের আমদানি থাকে। আর একে কেন্দ্র করে পিরোজপুরের পাড়েরহাটের বাদুরা নামক স্থানে গড়ে উঠেছে একটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। ফলে জেলেরা সাগর থেকে মাছ ধরে সরাসরি নিয়ে আসেন পিরোজপুরের একমাত্র এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। এ কেন্দ্রে শতাধিক প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের আমদানি থাকলেও ফ্যাপসা, লইট্যা, ছুরি, মর্মা, চিতলসহ প্রায় ৪০ প্রকারের সামুদ্রিক মাছের শুঁটকি তৈরি করেন তারা। কার্তিক মাস থেকে শুরু হয়ে প্রায় সাড়ে চার মাস চলে এই শুঁটকির ব্যবসা। কেমিক্যালমুক্ত ও পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে শুঁটকি তৈরি করায় এর চাহিদা অনেক।

 

 

 

স্থানীয়রা জানান, শুঁকটি পিরোজপুর ও এর আশেপাশের জেলাগুলোতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফলে চাহিদা বেড়েছে অনেকগুণ। পাড়েরহাটের চিথলিয়া শুঁটকি পল্লীতে প্রায় ১০০ শ্রমিক কাজ করেন। ফলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে। আমিষের চাহিদাও পূরণ হচ্ছে। আগে কক্সবাজার, কুয়াকাটা, দুবলারচর থেকে চড়া দামে শুঁটকি কিনতে হতো। এখন কম দামে শুঁটকি পেয়ে যাচ্ছেন সবাই। লইট্যাসহ বিভিন্ন শুঁটকি কম দামে সহজেই পাওয়া যাচ্ছে এখানে।

 

 

শুঁটকি ব্যবসায়ী আজগর আলী জানান, শুঁটকি ব্যবসা আগের থেকে অনেক বেশি লাভজনক। দিনদিন এর প্রসার হচ্ছে। মৌসুমে যখন সাগরের মাছের অনেক বেশি চাপ থাকে তখন মাছ কিনে শুঁটকি তৈরি করা হয়। এক সময় পাড়েরহাটের শুঁটকি দেশব্যাপী ছড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

 

 

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল বারী জানান, মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় কাঁচা মাছের পাশাপাশি জমে উঠছে শুঁটকি মাছের ব্যবসা। সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি ও মান নিয়ন্ত্রণে এবং শুঁটকির প্রসারে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ প্রশিক্ষণসহ সার্বিক সহযোগিতা করছে। পিরোজপুরে শুঁটকির অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। এতে মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু লবণ দিয়ে রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় শুঁটকি। সম্পূর্ণ কেমিক্যালমুক্ত এ শুঁটকি দেশের বিভিন্ন স্থানে রফতানি করা হয়। তাই আগামী দিনে শুঁটকি ব্যবসা ফলপ্রসূ হবে বলে মনে করেন তিনি।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ