বরিশাল

পানিতে মলের জীবাণু, দক্ষিণাঞ্চলে বাড়ছে ডায়রিয়ায় মৃতের সংখ্যা

By admin

April 22, 2021

 

দক্ষিণাঞ্চলের পানিতে মলের জীবাণু থাকায় বরিশাল বিভাগে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। হাসপাতালে হাসপাতালে দেখা দিয়েছে রোগীর শয্যা সংকট। কোথাও কোথাও ধারণ ক্ষমতার ১০ গুণ বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন।

 

বরিশালের বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, হঠাৎ করে অস্বাভাবিক হারে আক্রান্ত বেড়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে এই কর্মকর্তা বলেন, ভোলা জেলার মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট। কিন্তু বুধবার ওই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন ২৬৮ জন।

 

তিনি বলেন, ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি ডায়রিয়া রোগী আসায় হিমশিম খেতে হচ্ছে; তবে মেডিকেল টিম, স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত সবার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করছেন। হয়তো স্থান সংকট আছে, কিন্তু চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

 

বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিসংখ্যানবিদ এএসএম আহসান কবির জানান, বিভাগের ৪০টি উপজেলার ১৮টি এলাকায় ৪০৬ মেডিকেল টিম কাজ করছে। ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে ১৫৪২ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছেন যা মঙ্গলবারের চেয়ে ১৮ জন বেশি। এ নিয়ে বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ১৩৫ জন।

 

তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় পাদ্রিশিবপুর ইউনিয়নে আম্বিয়া বেগম নামে ৫০ বছর বয়সী এক নারী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ নিয়ে ২২ দিনে বিভাগে ৯ জনের মৃত্যু হলো।

 

ডা. বাসুদেব কুমার দাস আরও জানান, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিআর) গবেষক দল দক্ষিণাঞ্চলের পানিতে মলের জীবাণু পেয়েছে। যা থেকে সবচেয়ে বেশি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। বৃষ্টির মৌসুম এলে এই আক্রান্তের হার কমে যাবে। মূলত শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে গেলে অল্প পানিতে অধিক জীবাণু জমে থাকে। তখন সেই পানি কোনো কাজে ব্যবহার করলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

 

তিনি আরও বলেন, আইইডিসিআরের গবেষক দল তৃতীয় উপদ্রুত জেলা বরগুনায় জরিপ চালিয়ে দেখেছেন, সেখানে ৯৪ শতাংশ মানুষ টিউবওয়েলের পানি পান করলেও ৭১ শতাংশ মানুষ নদী-খাল, ডোবা-পুকুরের জীবাণুবাহিত পানি দিয়ে তৈজসপত্র পরিষ্কার করে। এভাবে ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়া।

 

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের চাহিদামতো বুধবার (২১ এপ্রিল) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ৩৫ হাজার কলেরার স্যালাইন পেয়েছি। এছাড়া বৃহস্পতিবার বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদল ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১ হাজার কলেরার স্যালাইন স্বাস্থ্য অধিদফতরকে বুঝিয়ে দেন।