পরিচয় মিলেছে পিরোজপুরে ছাত্রলীগ নেতাকে হুমকি দেওয়া ব্যক্তির

প্রকাশিত: ৩:০২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২২

পরিচয় মিলেছে পিরোজপুরে ছাত্রলীগ নেতাকে হুমকি দেওয়া ব্যক্তির
নিউজটি শেয়ার করুন

 

পিরোজপুরে ছাত্রলীগ নেতাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া সেই ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া গেছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে পরিচয় শনাক্ত করা সেই ব্যক্তির নাম আজগর আলী বিশ্বাস ওরফে তারা বিশ্বাস।

 

 

খুলনা মহানগরের হরিণটানা থানার রায়েরমহল রোডের বাসিন্দা মো. হারেজ বিশ্বাসের ছেলে তিনি। বিশ্বাস প্রোপার্টিজের মালিক ও বিশ্বাস গ্রুপের সিইও তিনি। এ ছাড়া খুলনার রিয়েল এস্টেট হাউজিং বিজনেস সোসাইটির (রিহ্যাবস) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তিনি। ভিন্ন মতাদর্শের হলেও ২০২১ সালের জানুয়ারিতে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে নিজেকে সদস্য হিসেবে ঠাঁই করে নেন তিনি।

 

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এর আগে গত ১১ জুলাই বিকেলে পিরোজপুর শহর থেকে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন আজগর বিশ্বাস। সে সময় শহরের পিটিআই মোড়ে গাড়িটি ধাক্কা দেয় ছাত্রলীগের পিরোজপুর পৌরসভা কমিটির সভাপতি আসিফ ইকবালকে। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে নতুন বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন পানির ট্যাংকের নিকট গিয়ে গাড়িটির গতিরোধ করেন। এ সময় গাড়ির চালককে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে নিষেধ করেন তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই চালক গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির পেছন থেকে একটি শটগান বের করে তাঁর দিকে তেড়ে আসেন। কাছে এসে কোনো কথা বলার আগেই শটগান লোড করে তাঁর বুকে ঠেকিয়ে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি। পরে তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েকজন ও পথচারীরা এগিয়ে এলে অস্ত্রধারী ব্যক্তি গাড়িতে উঠে দ্রুত খুলনার দিকে চলে যান।

 

 

এ পুরো ঘটনার ভিডিওটি পাশের একটি দোকানের সিসি ক্যামেরার রেকর্ড হয়। পরবর্তীতে ঘটনাটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ পিরোজপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ছাত্রলীগ নেতা আসিফ।

 

 

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আসিফ ইকবাল বলেন, ‘তারা বিশ্বাস নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। একটি লাইসেন্স করা অস্ত্র রাখা হয় মূলত নিজের রক্ষার জন্য। কিন্তু উনি তো হুমকি দেওয়ার জন্য অস্ত্র বের করেছেন। যিনি এভাবে অস্ত্র ব্যবহার করেন, তার অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। আমি দলের খুলনার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তাঁর বিরুদ্ধে জমি দখলসহ অনেক অভিযোগ আছে। আমি দল থেকে তাঁর বহিষ্কারের দাবি জানাব।’

 

 

ছাত্রলীগ এই নেতা আরও বলেন, ‘তারা বিশ্বাস এখন আমাকে ফোন করে এক দলের লোক বলে ক্ষমা চান। আমি তাঁকে কোনোভাবেই ক্ষমা করব না। তাঁর যদি প্রশাসনিকভাবে ২ / ১ দিনের মধ্যে বিচার না হয়, তাহলে পৌর ছাত্রলীগের অধীনে মানববন্ধনসহ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।’

 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আজগর বিশ্বাস তারা বলেন, ‘ওই দিন আমি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গাড়ি চালিয়ে খুলনা ফিরছিলাম। এ সময় পিরোজপুর শহরের পিটিআই এলাকায় চারটি মোটরসাইকেলে করে কয়েক যুবক আমার গতি রোধ করেন। এতে আমি ভয়ে গাড়ি থেকে নেমে আত্মরক্ষার্থে সঙ্গে থাকা অস্ত্র বের করে লোড করি। তবে কারো বুকে ঠেকানোর অভিযোগ মিথ্যা।’

 

 

অনুসন্ধানে জানা যায়, আজগর বিশ্বাস তারা খুলনায় বেশ প্রভাবশালী। মূলত জমি কেনাবেচা করেন। জড়িত সরকারদলীয় রাজনীতিতেও। যে কারণে তাঁর বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ দিলেও থানা-পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। তাঁর নামে একাধিক মামলা ও জিডি রয়েছে।

 

এ দিকে বিষয়টি নিয়ে মিডিয়াসহ প্রশাসনিক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ জ মো. মাসুদুজ্জামান বলেন, ‘থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা আসিফ ইকবাল। বিষয়টি আমরা বিভিন্ন প্রশাসনিক টিমকে অবহিত করেছি।’


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ