ঢাকা ৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০২২
বরিশাল, নবকন্ঠ ডেস্ক :: গত সোমবার রাতে সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আহত হন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু বকর সিদ্দিক। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে সাভার ও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাশিদ। এর আগে দুপুরে গ্রেপ্তারদের আদালতে পাঠায় সাভার মডেল থানা-পুলিশ।
পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাশিদ বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই আমরা খুব তৎপর ছিলাম। ঘটনার দুদিনের মাথায় এর সঙ্গে জড়িত সকল অপরাধীদের আমরা গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেও তাঁরা জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। পরে আজ আদালতে পাঠানো হলে তাঁরা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।’
গ্রেপ্তাররা হলেন—সাভারের শাহীবাগের রাসেল ফকির (২০), রাজধানীর গাবতলী কোটবাড়ির নাঈম (২০), সজীব আহমেদ (২০), গাবতলীর লালকুড়ি বাজারের কামরুল হাসান (২২), আশুলিয়ার নবীনগরের আরমান (২১) ও সাভার নামাবাজারের মুঠোফোন ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা (২৪)।
গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া মোবাইল, মানিব্যাগ, এটিএম কার্ড, মোবাইল বিক্রির ৫ হাজার টাকা ও চারটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এসপি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গ্রেপ্তার রাসেল ফকির, নাঈম, সজীব আহমেদ, কামরুল হাসান ও আরমান ছিনতাই ও ছুরিকাঘাতের ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিলেন। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। গোলাম মোস্তফার কাছ থেকে আবু বকর সিদ্দিকীর ছিনতাই হওয়া মোবাইল উদ্ধার করা হয়, যা তিনি ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে কিনেছিলেন। এ কারণে তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গোলাম মোস্তফা ছাড়া বাকিরা মাদকসেবী। তাঁরা বিভিন্ন অপরাধে জড়িত রয়েছেন। কামরুল, সজীব ও আরমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ছিনতাইয়ের সময় তাঁরা কলাপাড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু বকর সিদ্দিকীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁকে ছুরিকাঘাত করে।’
আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘ছিনতাই ও ছুরিকাঘাতের ঘটনার পর থেকে সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা, পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রশিদ ও উপপরিদর্শক (এসআই) সুদীপ কুমার গোপ জড়িতদের গ্রেপ্তারে কাজ করছিলেন। প্রযুক্তির সহায়তা ও তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার তিন দিনের মধ্যে তাঁরা লুণ্ঠিত মালামালসহ প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছেন।’
সিঅ্যান্ডবি এলাকাসহ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে ছিনতাই ও ডাকাতি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সিঅ্যান্ডবি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় প্রচুর জঙ্গল রয়েছে। এছাড়া এসব এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। জঙ্গল পরিষ্কার ও আলোর ব্যবস্থা করার পাশাপাশি পুলিশি টহল জোড়দার করা হবে। এ জন্য তিনি স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকাবাসীর সহায়তা কামনা করেন।
উল্লেখ্য, ছুরিকাঘাতের ঘটনায় আবু বকর সিদ্দিকের ভগ্নিপতি সুমন হোসেন গত মঙ্গলবার সাভার থানায় মামলা দায়ের করেন। ছুরিকাঘাতে আহত আবু বকর সিদ্দিক বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। একাধিক অস্ত্রোপচারের পর তিনি আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন।
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক