নবকন্ঠ ডেস্ক, বরিশাল:: পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সেলিম মাতবরের (রাশেদ) ব্যক্তিগত চেম্বারে ভুল চিকিৎসায় আলী বাবর নামে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুর বা হাত বাঁকা হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী শিশুর বাবা সিকদার নোমান ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে।
শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিচারের দাবীতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সিকদার নোমান।
সংবাদ সম্মেলনে দশমিনা উপজেলার আরজবেগী এলাকার বাসিন্দা সিকদার নোমান, তার স্ত্রী রাবেয়া বেগম এবং ৫ বছরের শিশু পুত্র আলী বাবর উপস্থিত ছিলেন।
সিকদার নোমান বলেন, ১৭ জানুয়ারি আমার ছেলে পা পিছলে পড়ে গিয়ে তার বা হাত ভেঙ্গে যায়। আমি প্রথমে দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে বলা হয় এই চিকিৎসা এখানে হবে না। আপনারা ডাক্তার সেলিম মাতবরের ব্যক্তিগত চেম্বার চাঁদনী ফার্মেসিতে নিয়ে যান। আমি দ্রুত সেখানে নিয়ে গেলে ডাক্তার সেলিম মাতবর বলেন, এটি খুব জটিল কেস। অপারেশন করতে হবে। এ জন্য তিনি আমার কাছে ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি তাৎক্ষনিক বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ধার করে ডাক্তারকে নগদ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করি। এবং ২৪ জানুয়ারি হাতের প্লাস্টার খোলার দিন বাকী ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করি। তবে আমার ছেলে হাতের অপারেশন যেভাবে করার কথা ডাক্তার সেভাবে করেনি।
৩০ জানুয়ারি ডাক্তারের চেম্বারে নিয়ে গেলে তিনি পুনরায় এক্সরে করে এবং আরও কিছু ঔষধ পত্র দিয়ে দেন। কিন্তু বাড়ি ফিরে আমার সন্তান ব্যথায় ডাক চিৎকার করতে থাকে। আমি দুই ফেব্রুয়ারি ঢাকার জাতীয় পঙ্গু হাসপাতাল ও পূর্নবাসন কেন্দ্রের ডা. তানভীর মাহমুদের দশমিনা চেম্বারে দেখালে তিনি রিপোর্ট দেখে দ্রুত আমার ছেলেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থোপেডিকস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ডা. এ,এফ,এম রুহাল হককে দেখাতে বলেন।
আমি ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় তাকে দেখালে তিনি সকল চিকিৎসাপত্র দেখে বলেন, ডা. সেলিম মাতবরের চিকিসা ব্যবস্থা সঠিক ছিল না। এমন অবস্থায় আমার সন্তানের বা হাতটি পঙ্গু হয়ে গেছে। আমি বিচার চাই। এ ঘটনায় আমি আদালতে মামলা করেছি। আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. সেলিম মাতবর বলেন, আমি যতটুকু বইপত্র পড়েছি তাতে আমি কোনো ভুল চিকিৎসা করিনি। আর যে সব ডাক্তাররা বলছে আমি ভুল চিকিৎসা করেছি তারা কি কোনো লিখিত দিয়েছেন? আমি শুনেছি মামলা হয়েছে, তবে মামলার কাগজপত্র এখনও পাইনি। কাগজপত্র পেলে আদালতে আমি আমার বক্তব্য উপস্থাপন করব।