ঝালকাঠির নলছিটিতে ‘স্টাইল’ চুলের কাটিং দেওয়ায় মো. হৃদয় হাওলাদার (১২) নামে এক কিশোরের মাথা ন্যাড়া করে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার উপজেলার আমিরাবাদ বাজারের একটি সেলুনে এ ঘটনা ঘটে। রাতে ওই কিশোরের বাবা অভিযুক্ত মো. হায়দার হাওলাদারের (৬০) বিচার দাবি করে নলছিটি থানায় একটি অভিযোগ দেন। হায়দার দক্ষিণ মগড় এলাকার মৃত বাকে আলীর ছেলে। সে মগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক শাহিনের চাচা।
মো. হৃদয় হাওলাদার দক্ষিণ মগড় এলাকার অটোরিকশা চালক মো. ফারুক হাওলাদারের ছেলে। সে স্থানীয় মগর দাখিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ে।
কিশোরের বাবা অভিযোগ করেন, সোমবার সকালে তাঁর ছেলে হৃদয় হাওলাদার বরিশাল-ঝালকাঠি আঞ্চলিক মহাসড়কের কাচারিবাড়ির নরসুন্দর অমল চন্দ্র শীলের দোকানে ‘স্টাইল’ করে চুলে কাটিং দেয়। পরে সে বাড়িতে ফেরার পথে স্থানীয় হায়দার হাওলাদার হৃদয়ের চুলের কাটিং দেখে ক্ষিপ্ত হন। তিনি হৃদয়কে ধরে নিয়ে আমিরাবাদ বাজারের দেব কুমার শীলের সেলুনে মেশিন দিয়ে মাথার চুল সম্পূর্ণ ন্যাড়া করে দেন। হৃদয় এর প্রতিবাদ করলে হায়দার হাওলাদার তাকে মারধর করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনার বিচার চেয়ে হৃদয়ের বাবা ফারুক হাওলাদার রাতে নলছিটি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান।
হৃদয়ের বাবা ফারুক হাওলাদার বলেন, আমার ছেলে ‘স্টাইল’ করে চুলের কাটিং দিছে, এটা কারো ভালো না লাগতে পারে। যদি আমার ছেলে কোন অপরাধ করে সে আমার কাছে বলতে পরতেন। কিন্তু তা না করে হায়দার হওলাদার চেয়ারম্যানের প্রভাব দেখিয়ে নিজেই আমার ছেলের মাথা ন্যাড়া করে মরধর করেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
নরসুন্দর অমল চন্দ্র শীল বলেন, আমার দোকানে এসে যে যেমন স্টাইলে চুল কাটিং দিতে চায়, আমি সেভাবেই কেটে দিই। অন্য একটি সেলুনে বসে ছেলেটির চুল ন্যাড়া করে দেন হয়দার সাহেব। বিষয়টি নিয়ে আমাদের এলাকায় ব্যাপক আলোচনা চলছে।
চুল ন্যাড়া করার কথা স্বীকার করে হায়দার হাওলাদার বলেন, ছেলেটি অল্প বয়সে উগ্র স্টাইলে চুল কাটায় একটু শাসন করেছি। একটু শাসন না করলে শিশুকিশোররা নষ্ট হয়ে যাবে।
মগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক বলেন, এ ঘটনা যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে সঠিক বিচার করা হবে।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, কিশোরের চুল ন্যাড়া করে মারধরের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য একজন উপপরিদর্শককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘটনা সত্য হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।