ধর্ষণবিরোধী মহাসমাবেশ থেকে ৯ দফা দাবি

প্রকাশিত: ৯:৪৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০২০

ধর্ষণবিরোধী মহাসমাবেশ থেকে ৯ দফা দাবি
নিউজটি শেয়ার করুন

 

সারা দেশে সংঘটিত ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে শাহবাগে অনুষ্ঠিত হওয়া সমাবেশ থেকে ৯ দফা দাবি দিয়েছেন আন্দোলকারীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। পাশাপাশি আগামী ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত নানা কর্মসূচিরও ঘোষণা দেওয়া হয়।

 

শুক্রবার (৯ অক্টোবর) বিকাল পৌনে ৪টায় জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশ শুরু হয়। ধর্ষণ ও নিপীড়ন বন্ধে সরকারের বিরুদ্ধে ‘নিষ্ক্রিয়তার’ অভিযোগ এনে এ ‘মহাসমাবেশের’ ডাক দিয়েছে বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর প্ল্যাটফর্ম ‘ধর্ষণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’।

 

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স নয় দফা দাবি উত্থাপন করেন।

 

দাবি সমূহ:

 

>সারা দেশে অব্যাহত ধর্ষণ-নারীর প্রতি সহিংসতার সঙ্গে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধ ও বিচারে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।

 

> পাহাড়-সমতলে আদিবাসী নারীদের ওপর সামরিক-বেসামরিক সকল প্রকার যৌন ও সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।

 

> হাইকোর্টের নির্দেশনানুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতন বিরােধী সেল কার্যকর করতে হবে। সিডাে সনদে বাংলাদেশকে স্বাক্ষর ও তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সকল আইন ও প্রথা বিলােপ করতে হবে।

 

> ধর্মীয়সহ সকল ধরনের সভা-সমাবেশে নারী বিরােধী বক্তব্য শাস্তিযােগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন বন্ধ করতে হবে। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রেণে বিটিসিএলের কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে। সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক চর্চায় সরকারিভাবে পৃষ্ঠপােষকতা করতে হবে।

 

> তদন্তকালীন সময়ে ভিকটিমকে মানসিক নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ভিকটিমের আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

 

> অপরাধ বিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। ট্রাইবুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে অনিষ্পন্ন সকল মামলা দ্রুত নিষ্পন্ন করতে হবে।

 

> ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন ১৮৭২-১৫৫(৪) ধারাকে বিলােপ করতে হবে এবং মামলার ডিএনএ আইনকে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে।

 

> পাঠ্যপুস্তকে নারীর প্রতি অবমাননা ও বৈষম্যমূলক যে কোনাে প্রবন্ধ, নিবন্ধ, পরিচ্ছেদ, ছবি, নির্দেশনা ও শব্দ চয়ন পরিহার করতে হবে।

 

> গ্রামীণ সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযােগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকে শাস্তিযােগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।

 

আগামী ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত কর্মসূচি ঘোষণা করেন ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায়। তিনি বলেন, শাহবাগে লাগাতার এ অবস্থান প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।

 

১১ অক্টোবর রোববার আলোকচিত্র প্রদশর্ন, ১২ অক্টোবর সাংস্কৃতিক সমাবেশ, ১৩ অক্টোবর ধর্ষণবিরোধী চলচ্চিত্র উৎসব, ১৪ অক্টোবর নারী সমাবেশ ও ১৫ অক্টোবর সারা ঢাকা শহরে ধর্ষণবিরোধী সাইকেল র‍্যালি।

 

এর মধ্যে যদি দাবি মেনে নেওয়া না হয় তাহলে ১৬ অক্টোবর সকাল ৯টায় শাহবাগ থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ পর্যন্ত লংমার্চ অনুষ্ঠিত হবে। ১৭ অক্টোবর সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ