বরিশালঃ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী আগামী তিন মাসের মধ্যে বরিশাল বিভাগের সব জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের সম্মেলনের মাধ্যমে দলের নতুন কমিটি গঠন করা হবে। সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি যেসব এলাকায় কোন্দল-দ্বন্দ্ব বা বিভেদ রয়েছে, তা দ্রুত নিরসন করে সংগঠনকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী পক্ষ কোনোভাবেই যেন দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য নেতাকর্মীদের সতর্ক থেকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে শনিবার বরিশাল বিভাগের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভায় নেতারা এসব নির্দেশ দেন। বরিশাল বিভাগের একদম ইউনিয়ন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রথম ভার্চুয়াল সভায় কেন্দ্রীয় নেতারা সংগঠনকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা তৃণমূল নেতাদের কাছে পৌঁছে দেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ। এছাড়াও সভায় যুক্ত ছিলেন যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, নির্বাহী সংসদের সদস্য গোলাম কবীর রব্বানী চিনু, আনিসুর রহমানসহ বরিশাল বিভাগের সব জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সংসদ-সদস্য, উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, ইউনিয়ন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত চেয়ারম্যানরা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
জানতে চাইলে বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন যুগান্তরকে জানান, ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রথম ভার্চুয়াল সভায় তৃণমূলের নেতারা সরাসরি আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা জানিয়েছেন। আমরা তাদের কথা শুনেছি এবং তাদের কাছে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশনা পৌঁছে দিয়েছি। তিনি জানান, বৈঠক থেকে আগামী তিন মাসের মধ্যে বরিশাল বিভাগের ইউনিয়ন পর্যন্ত সব সম্মেলন সম্পন্ন করে কমিটি গঠনের তাগাদা দিয়েছি। তৃণমূল নেতারাও শীঘ্রই সব পর্যায়ে সম্মেলন করে দলকে আরও শক্তিশালী করবেন বলে জানিয়েছেন। বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতারা বরিশাল বিভাগের কোথাও কোনো সাংগঠনিক অসুবিধা বা বিভেদ থাকলে তা দ্রুত নিরসন করে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা এবং বিএনপি-জামায়াতসহ অশুভ শক্তিরা যাতে জ্বালাও-পোড়াওসহ অতীতের মতো দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে, সেজন্য তৃণমূল নেতাদের সর্বদা সতর্ক থাকারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বার্থবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠী দ্রব্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে : ভার্চুয়াল বৈঠকের শুরুতে আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সাংবাদিকদের বলেন, একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এবং একটি কায়েমি স্বার্থবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠী যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না, বাংলাদেশকে পাকিস্তানের আইএসআইয়ের মতাদর্শে সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বানাতে চায়, সেই অপশক্তি দ্রব্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার জন্য দেশের ভেতর-বাইরে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, রমজান সন্নিকটে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গত কয়েক বছর করোনা সংক্রমণ থাকার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারসহ দেশেও দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী একশ্রেণির মুনাফাখোর, সুবিধাবাদী ব্যবসায়ীদের বিভিন্নভাবে উসকে দিচ্ছে। মানুষের দুঃখ, কষ্ট যাতে বৃদ্ধি পায়, সেজন্য তারা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। দ্রব্যমূল্যসহ নির্মাণসামগ্রীর মূল্য যাতে বৃদ্ধি পায়, সেজন্য তারা এসব ব্যবসায়ীর সঙ্গে গোপনে পরামর্শ করছে।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশবিরোধী অপশক্তি যারা দেশের সম্প্রীতিকে ধ্বংস করে, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের মোকাবিলা করতে সক্ষম। তিনি বলেন, সরকার বাজার মনিটরিংয়ে নিয়মিত কাজ করছে। সরকারের পক্ষ থেকে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর কারণে বাজার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।