ঢাকা ৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৫০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০২০
’৭০-এর জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে পিরোজপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও কাঁঠালিয়া আসনের মানুষের কাছে উগ্র ও জ্বালাময়ী বক্তব্যের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ভোট চেয়েছিলেন চরমোনাই পীর মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক। জামায়াতের প্রার্থীকে ভোট না দিলে দেশের মানুষের ধর্ম থাকবে না, এমনকি এদেশ পূর্ব পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া বা ভারত হয়ে যাবে, এমন বক্তব্যও ব্যবহার করেন তিনি।
সেই সময় একটি জাতীয় দৈনিকে ‘আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে চরমোনাই পীর সাহেবের আবেদন’ শিরোনামে এ বিষয়ে সংবাদও প্রকাশিত হয়।
ওই সংবাদের সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনী প্রচারণার বক্তব্য ছিল অনেকটা এমন- ‘আসন্ন জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে পিরোজপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও কাঁঠালিয়া থেকে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও সংগ্রামী জননেতা মওলানা আবদুর রহিমকে ভোট দেয়ার জন্যে মুসলিম জনগণ, বিশেষ করে তার মুজাহিদগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চরমোনাই পীর মওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক।
মওলানা ইসহাক মুসলিম জনগণ ও তার মুজাহিদগণের প্রতি আবেদনে বলেন- ‘আমার জীবনে কাউকে কোনো দিন ভোটের জন্য অনুরোধ করিনি। এবার সঠিকভাবে জানতে পারলাম যে, ভোটের দ্বারাই পাকিস্তানে ইসলাম থাকবে, নচেত বিদায় নেবে। এ জন্যেই হাক্কানি আলেমরা এবার ভোটের জন্য জীবনপণ করেছেন।’
চরমোনাই পীর আরও বলেন, পিরোজপুর, কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও কাঁঠালিয়া থেকে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী ও সুযোগ্য আলেম মাওলানা আবদুর রহীম পাকিস্তানে ইসলামী আন্দোলনের জন্য দীর্ঘদিন ঘরে আন্দোলন করছেন। আপনারা নিজেদের মতো করে জীবনভর ভোট দিয়েছেন। এবার সুযোগ্য প্রার্থী মাওলানা আবদুর রহীমকে ভোট দিয়ে আল্লাহ ও রসুলকে খুশি করুন।
শুধু তাই নয়, পীর সাহেব এ মর্মে সাবধান বাণী উচ্চারণ করেন যে, ‘এবার যদি নিঃস্বার্থ হাক্কানি আলেমদের ভোট না দেন, তবে এই পাকিস্তান, হিন্দুস্তান, কিংবা চীন-রাশিয়ায় পরিণত হবার আশঙ্কা রয়েছে।’ তিনি তার মুজাহিদদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘একেও ইসলামের একটি জেহাদ মনে করবেন এবং আমার ‘ভোট দিবেন কাহাকে’ নামের বইটি পড়ে আমল করবেন।’
উল্লেখ্য, সেই নির্বাচনে ১৬২ আসনের মধ্যে ১৬০টিতে আওয়ামী লীগ জয় লাভ করে। ১টি স্বতন্ত্র ও ১টিতে পিডিপি জয় লাভ করে। ওই আসনসহ বেশিরভাগ আসনেই অন্য দলগুলোর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। কারণ জনগণের সাড়া ছিল না। একই ধারার দাবি ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিরুদ্ধেও করা হয়। যারা সেই দাবি করে তারা সেই নির্বাচনে ভেসে যায়। সারাদেশের ৩০০ আসনের মাত্র ৯টিতে জয়লাভ করে।
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক