বরিশাল

চাখারে নির্যাতিত নারীকে ১০ দিন আটকে রাখলেন ইউপি চেয়ারম্যান

By admin

January 12, 2021

 

বরিশাল  : তিন সন্তানের জননীকে ধর্ষণের ঘটনা ‘মিটমাট’ করে দেওয়ার আশ্বাসে দশ দিন ধরে ধর্ষিত নারীকে নিজের ঘরে আটকে রাখলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান। সেখান থেকে পালিয়ে এসে থানায় মামলা করতে চালিয়ে তা গ্রহন করেনি থানা। অবশেষে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন তিন সন্তানের জননী। এছাড়া ধর্ষককে ধর্ষিত নারীর স্বামী ঘরে আটকে রাখলে ওই চেয়ারম্যানের ভাইয়ের নেতৃত্বে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার উত্তর চাখার ইউনিয়নের দড়িকর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।

 

ধর্ষণের ঘটনায় রোববার (১০ জানুয়ারী) বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেন ওই গ্রামের ধর্ষিতা নারী। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বরিশাল জেলা গোয়েন্দা শাখাকে তদন্ত করে চলতি বছরের ৮ মার্চের (সোমবার) মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেছেন।

 

অভিযুক্ত ধর্ষকরা হলেন, আন্টু হাওলাদার, সেলিম হাওলাদার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ইউপি চেয়ারম্যানের আপন ভাই সেলিম সরদার।

 

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর বানারীপাড়া উপজেলার উত্তর চাখার ইউনিয়নের দড়িকর গ্রামের বাবুল হোসেনের স্ত্রী নিজ ঘরে রান্নাবান্না করছিল। এসময় আন্টু হাওলাদার সিলিং ফ্যান নেওয়ার কথা বলে তাকে ডেকে আনে। পরে গামছা দিয়ে গৃহবধুর মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে। ধর্ষিত ওই নারীর স্বামী বাবুল হোসেন ঘরে আসলে ধর্ষণ আন্টু হাওলাদারের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে ওই এলাকার সেলিম হাওলাদার ও সেলিম সরদার এসে স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে ধর্ষক আন্টু হাওলাদারকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। ধর্ষিত ওই নারী ও তার স্বামী বানরেীপাড়া থানায় মামলা করতে চাইলে স্থানীয় চেয়ারম্যান খিজির সরদার ওই নারীকে ধরে নিয়ে দড়িকর গ্রামের একটি বাড়িতে দশ দিন বন্দি করে রাখে। দশ দিন বন্দি থাকার পর চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) পালিয়ে আসে।

 

নির্যাতিত নারীর স্বামী বলেন, আন্টু এই ঘটনার আগে বেশ কয়েকবার আমার স্ত্রীকে কু প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু আমার স্ত্রী এতে রাজি না হওয়ায় আন্টু ও তার সহযোগীরা মিলে আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছে। চেয়ারম্যান খিজির সরদার ধর্ষকদের পক্ষ নিয়ে এই ঘটনার একটি সুষ্ঠ সমাধান করে দেবে বলে আমাদের জানায়। তবে সে আমার স্ত্রীকে নিয়ে বন্দি করে রাখে। আর আমাকেও বাড়িতে যেতে দেয় না। বন্দি করে রাখা অবস্থায় চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা আমার স্ত্রীর কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছে।

 

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান খিজির সরদারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।