চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে বরিশালে বৈষম্যবিরোধী ৩ নেতার পদত্যাগ

প্রকাশিত: ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ, জুন ২, ২০২৫

চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে বরিশালে বৈষম্যবিরোধী ৩ নেতার পদত্যাগ
নিউজটি শেয়ার করুন

 

বরিশাল প্রতিনিধি:: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলা কমিটির মুখ্য সংগঠকসহ তিন নেতা পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগের কারণ হিসেবে কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে তদবির, অপকর্ম ও চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন তারা। তাদের ভাষ্য, নানা কারণে সংগঠনটি গণবিরোধী প্ল্যাটফর্মে রূপ নিয়েছে। এজন্য পদত্যাগ করছেন।

 

 

রবিবার রাতে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন এই তিন নেতা। তারা হলেন বরিশাল জেলার মুখ্য সমন্বয়ক হাসিবুল আলম (তুরান), যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম (আবিদ) ও সদস্য তাহসিন আহমেদ (রাতুল)।

 

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হাসিবুল আলম জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে বিভিন্ন প্রকৌশল দফতরে গিয়ে ঠিকাদারি কাজ পেতে নেতারা তদবির করছেন। এমনকি তার (হাসিবুল) নাম ব্যবহার করে জেলা কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন উদ্দিন চাঁদাবাজি ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন।

 

 

সংবাদ সম্মেলনে হাসিবুল আলম বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশপন্থী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন থেকে এসে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ প্ল্যাটফর্মকে অনেকে বিতর্কিত করেছেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আমার পরিচয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন উদ্দিন চাঁদাবাজি ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন। কথিত কিছু নেতাকর্মী দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের শ্রমজীবী মানুষের কাছে না গিয়ে বিভিন্ন সরকারি ও আমলাদের দফতরে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তারা দেশের মানুষকে সচেতন না করে পুরোনো রাজনৈতিক ধারায় আগ্রাসী, দখলবাজি, সাম্প্রদায়িক উসকানি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মামলা বাণিজ্য করে চলেছেন।’

 

 

 

হাসিবুল আলম বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। যেখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণ থাকবে এবং বাংলাদেশপন্থী রাজনৈতিক ধারার চর্চা হবে। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে কাজ না করে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে, যা জুলাই অভ্যুত্থানের প্রত্যাশিত রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। এ কারণে সংগঠনটি একটি গণবিরোধী প্ল্যাটফর্মে রূপ নিয়েছে। তাই জুলাই শহীদ ও আহতদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি না করে পদত্যাগ করাকে যৌক্তিক মনে করেছি।’

 

 

অভিযোগের বিষয়ে জেলা শাখার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন উদ্দিন বলেন, ‘চাঁদাবাজির অভিযোগ সত্য নয়। পুলিশ কমিশনার ঘটনার তদন্ত করেছেন। তাতে চাঁদাবাজির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বাধাগ্রস্ত করতে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।’

 

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলা আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন বলেন, ‘চাঁদাবাজির অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা এখন পর্যন্ত কেউ তদবির করিনি। যদি কেউ গোপনে করে থাকে তবে তা ভিন্ন কথা। তারা পদত্যাগের কথা আমাকে জানাননি। সংগঠনে অনিয়ম হয়ে থাকলে তারা প্রতিবাদ করতে পারতেন। কিন্তু তা তারা করেননি। এখন সংগঠন তাদের ভালো লাগছে না। তাই অভিযোগ দিয়ে দল থেকে বের হয়ে গেছেন।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ