কুয়াকাটায় বাড়ছে বিষমুক্ত শুটকির কদর

প্রকাশিত: ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২৩

কুয়াকাটায় বাড়ছে বিষমুক্ত শুটকির কদর
নিউজটি শেয়ার করুন

 

 বরিশাল, নবকন্ঠ ডেস্ক :: শুধুমাত্র লবন দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয় বিষমুক্ত শুটকি। আর সমুদ্রপাড়ে খোলা আকাশের নিচে কেবল রোদের আলো এবং বাতাসের সাহায্যে কাঁচা মাছ শুকিয়ে বিক্রি করা হয় ক্রেতাদের কাছে। আর উন্মুক্ত পরিবেশে প্রাকৃতিকভাবে শুকানো শুটকি কিনতে দুর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন শুটকিপ্রেমীরা।

 

 

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত প্রাকৃতিকভাবে দর্শনার্থীদের কাছে বিখ্যাত হলেও বেশ কয়েক বছর ধরে কাছে পর্যটকদের কাছে সুনাম কুড়াচ্ছে কুয়াকাটার বিষমুক্ত শুটকি। যা এরমধ্যে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ঘুরতে আসা প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে কুয়াকাটার শুটকি এখন অন্যতম।

 

 

তবে শুটকি উদপাদনে সরকারি-বেসরকারিভাবে নির্দিষ্ট কোনো পল্লী না থাকায় গত কয়েক বছর ধরে শীত মৌসুমে কুয়াকাটা সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট অস্থায়ীভাবে প্রক্রিয়াজাত করছেন উৎপাদনকারীরা। চলতি মৌসুমেও ভ্রাম্যমাণ অবস্থায় লেবুর বনসহ সৈকতের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে শুকানো হচ্ছে শুটকি। তবে কোনো ধরনের কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই শুধুমাত্র লবন মেখে সৈকতে বাঁশের মাচা বানিয়ে রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হচ্ছে পর্যটকদের পছন্দের শুটকি মাছ।

 

 

শুটকি পল্লীতে গিয়ে দেখা মেলে পোয়া শুটকি, সোনাপাতা, মধুফাইস্যা, রূপচাঁদা, শাপলাপাতা, চাপিলা, ফাইস্যা, লইট্ট্যা, চিংড়ি, ছুড়ি, হাঙ্গর, ভোল ও কোড়ালসহ অন্তত ৫০ প্রজাতির সুস্বাধু শুকানো মাছের। ফলে প্রতিনিয়ত শুটকি পল্লীতে পছন্দের শুটকি সংগ্রহে ভিড় জমান পর্যটকসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা।

 

 

রংপুর থেকে আসা পর্যটক ইমাম উদ্দিন বলেন, আমরা শুটকি প্রেমী মানুষ, দেশের বিভিন্ন এলাকার শুটকি খেয়েছি। কিন্তু কুয়াকাটার শুটকির কথা শুনে এখানে এসেছি। ভ্রমণ শেষে বেশকিছু শুটকি নিয়েছি। এক কথায় অসাধারণ শুটকি।

 

 

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক আনিস-নাজমা দম্পতি জানান, বহুদিন ধরে অফিস কলিগদের কাছে কুয়াকাটার শুটকির কথা শুনেছি। তাই কুয়াকাটায় এসেছি। এসে দেখলাম আসলেই প্রাকৃতিকভাবে শুটকি প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। তাই লইট্রাসহ কয়েক ধরনের শুটকি কিনেছি। পরিবারের পাশাপাশি স্বজনদের গিফট করবো।

 

 

লেবুর বন এলাকার শুটকি উৎপাদনকারী হানিফ জানান, সৈকতে প্রায় ৩০ বছর ধরে শুটকি মাছের ব্যবসা করছেন তিনি। প্রতি বছরই তাদের বিভিন্ন কারণে স্থান পরিবর্তন করতে হচ্ছে। এতে অনেক সময় লোকসানও গুনতে হচ্ছে তাদের।

 

 

তিনি আরো বলেন, দোকানিদের চাহিদানুযায়ী মাছ শুকাতে পারি না। আর দোকানিরাও ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে পারে না। একই সুরে কথা বলেন, কুয়াকাটার একাধিক শুটকি দোকানিরা। তারা বলছেন, যারা শুটকি তৈরি করে তাদের বার বার স্থানান্তরিত করা হয়। ফলে দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও অনেক সময়ই পছন্দের শুটকির অভাবে ক্রেতাদের দেয়া যায় না। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে শুটকি প্রক্রিয়াজাত করনের লক্ষে একটি স্থায়ী পল্লী নির্ধারণের দাবী সংশ্লিষ্ট সকলের।

 

 

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য জানান, স্থায়ী শুটকি পল্লী নির্মাণের লক্ষ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত শুটকি ব্যবসায়ীদের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ