বাউফলে স্বাস্থ্য কর্মীকে মারধর, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত: ৫:১৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৯, ২০২১

বাউফলে স্বাস্থ্য কর্মীকে মারধর, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা
নিউজটি শেয়ার করুন

 

 

পটুয়াখালীর বাউফলে চেয়ারম্যানের ইচ্ছানুযায়ী করোনার টিকা না দেওয়ায় এক ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকর্মীকে পিটানোর ঘটনায় সালিস বৈঠকে কিশোরীকে বিয়ে করা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের আলোচিত সেই চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারের বিরুদ্ধে বাউফল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

সোমবার (০৯ আগস্ট) দুপুরে স্বাস্থ্য কর্মী আল-আমিন সিকদার বাদী হয়ে বাউফল থানায় মামলা করেছেন বলে থানা সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যানের ইচ্ছানুযায়ী করোনার টিকা না দেয়ায় কিল ঘুষি আর লাথি মারেন স্বাস্থ্য কর্মী আল-আমিন সিকদারকে। এ ঘটনায় সে অজ্ঞান হয়ে যায়। এছাড়াও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন ইউনিয়ন সহকারী স্বাস্থ্য পরির্দশক তাসলিমা নাজনিন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচও) প্রশান্ত কুমার সাহাকে।

 

আল-আমিন সিকদার ওই ইনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন করে কনকদিয়া ইউনিয়নে ৬০০ জনকে করোনার টিকা দেয়ার জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করে কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু চেয়ারম্যান বেলা ১১টার দিকে এসে স্বাস্থ্য কর্মীদের বলেন, যারা ভ্যাকসিন নিতে আসছে তাদের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি রেখে ভ্যাকসিন দিয়ে দেন। এ সময় তারা (স্বাস্থ্য কর্মী) সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনের কথা বললে তিনি (শাহীন চেয়ারম্যান) ক্ষিপ্ত হয়ে আল আমিন শিকদারকে দুই হাত দিয়ে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি এবং লাথি মারেন। এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে যায়। এ সময় ইউনিয়ন সহকারী স্বাস্থ্য পরির্দশক তাছলিমাকে ও ইউএইচও কে গালাগালি করেন।’ এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য কর্মী আল-আমিন সিকদার বাদী হয়ে বাউফল থানায় অভিযোগ এ দাখিল করেন।

 

তাসলিমা নাজনিন বলেন, ‘যে অশ্লীল ভাষায় আমাকে আর ইউএইচও স্যারকে গালাগালি করেছে তা মুখে শোভা পায় না।’

 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, কতৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে স্বাস্থ্যকর্মী আল আমিন সিকদার বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

 

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার বলেন, ‘নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। যারা আইডি কার্ড নিয়ে আসবে তারা টিকা পাবে। অথচ এখানে টিকা দিতে এসে স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেদের আত্মীয়-স্বজনকে টিকা দিচ্ছে। বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ায় আমি এর প্রতিবাদ করেছি। কাউকে মারধর কিংবা গালাগালি করার অভিযোগ সত্য না।

 

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আল মুন বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হবে।

 

উল্লেখ্য, ২৫ জুন সালিস বৈঠকে এক কিশোরীকে জোর করে বিয়ে করে ব্যাপক আলোচিত হন চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার। এর আগে একাধিক সরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে মারধর করে ব্যাপক সমালোচিত হন। সে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি পরপর দুবার নৌকা প্রতীক নিয়ে কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ