ঢাকা ১৬ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মবার্ষকী আজ সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর)। ৭৪তম জন্মদিনেও দেশের মানুষের কল্যাণে নিযুক্ত থাকার ঘোষণা দিয়ে আড়ম্বরতা বর্জনের কথা বলেছেন তিনি।
গোপালগঞ্জের মধুমতি নদী বিধৌত টুঙ্গিপাড়ায় ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি তিনি।
গত কয়েকবছর ধরে তিনি এইদিনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করলেও এবার করোনা মহামারি পরিস্থিতির কারণে দেশেই আছেন।
তিনি এবছর ৭৫তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ইউএনজিএ অধিবেশনে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অংশগ্রহন করেছেন। উচ্চ পর্যায়ের এই ভার্চুয়াল অধিবেশনে তিনি রোহিঙ্গা সংকট ও সাশ্রয়ী মূল্যে কার্যকর কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বিশ্বব্যাপী সমবণ্টনসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শনিবার ২৬ সেপ্টেম্বর অন্যান্য বিশ্বনেতাদের অংশগ্রহনে ইউএনজিএ’র সাধারণ বিতর্কে প্রতি বছরের মতো আগের রেকর্ডকৃত বাংলায় ভাষণ দেন।
করোনা আতঙ্কের আবহেই তার জন্মদিন উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করবে।
নিজ দলের নেতাকর্মী এবং দেশের সর্বস্তরের মানুষ এদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা ও দেশের প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ কামনা এবং শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা জানাবেন। দিনটি উপলক্ষে সারাদেশে সব মসজিদে দোয়া মাহফিল এবং মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
জন্মদিন প্রসঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার জন্মদিন বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। বঙ্গবন্ধু আমাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতার রোল মডেল। শেখ হাসিনা আমাদের উন্নয়ন এবং অর্জনের রোল মডেল। তিনি নিজে যা অর্জন করেছেন, তা নজিরবিহীন। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে বিশেষ মর্যাদায় উন্নীত করেছেন। তার জন্মদিন পালন না করলে আমরা জাতির কাছে অকৃতজ্ঞ থেকে যাব।’
চতুর্থবারের মত দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে একটি রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করেছেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনেও তিনি বিশ্বনেতাদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতায় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিমদের আশ্রয় দিয়ে সারা বিশ্বে হয়েছেন প্রশংসিত। বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।
এছাড়াও, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্থায়ী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, খাদ্যে স্বনির্ভরতা, নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ অবকাঠামো, যোগাযোগ, জ্বালানী ও বিদ্যুৎ, বাণিজ্য, আইসিটি এবং এসএমই খাতে এসেছে ব্যাপক সাফল্য। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি সম্পাদন, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতিসহ জাতীয় জীবনের বহুক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে করোনাকালেও দেশের প্রবৃদ্ধি এশিয়ায় প্রায় সবদেশের ওপরে। গত সাড়ে ৬ মাস বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একদিনের জন্যও বসে থাকেননি, প্রতিদিনই কাজ করছেন। করোনা মোকাবেলায় তাঁর বলিষ্ট নেতৃত্বে এই মহামারিকে নিয়ন্ত্রন এবং অর্থনীতির চাকা সচল রাখা গেছে।
বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নয়নের পাশাপাশি শেখ হাসিনার ঝুলিতে জমেছে অনেকগুলো অর্জন। পেয়েছেন আন্তর্জাতিক অনেক সম্মাননা ও পদক। এ পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে দেওয়া আন্তর্জাতিক পুরস্কারের সংখ্যাও অনেক (৩৯টি)। টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশের সফলতা জন্য গত বছরের (২০১৯) ২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কার দেয় গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন এবং ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই)। একই মাসে শেখ হাসিনাকে ড. কালাম স্মৃতি ইন্টারন্যাশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পদক প্রদান করা হয়। এর আগে বিশ্বের বিভিন্ন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট শান্তি প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র সমুন্নত ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন পর্যায়ের পদক প্রদান করে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে দায়িত্বশীল নীতি ও তার মানবিকতার জন্য প্রধানমন্ত্রী আইপিএস ইন্টারন্যাশনাল এচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড এবং ২০১৮ স্পেশাল ডিসটিংশন এওয়ার্ড ফর লিডারশিপ গ্রহণ করেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রবক্তা স্বপ্নদর্শী এই নেত্রী ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণের পর থেকে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করেন এবং ১৯৯৬ সালে প্রথম, ২০০৮ সালে দ্বিতীয় এবং ২০১৪ সালে তৃতীয় এবং ২০১৮ সালে চতুর্থ বারের মত নির্বাচনে জয়লাভ করে দলকে দেশের নেতৃত্বের আসনে বসাতে সক্ষম হন।
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক