ঢাকা ২৪শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৫৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
রোহিঙ্গাদের বিপ্লোবী নেতা কাশেম রাজার ছেলে ও কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলম চৌধুরী ওরফে রাজা শাহ আলমকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বানানোর জন্য আল্লাহ’র কাছে মোনাজাত করেছেন কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা শরণার্থীরা।
উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক হওয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি মসজিদে আয়োজিত খতমে কোরআন শেষে দোয়া মাহফিলে আল্লাহ’র কাছে আবেদন জানানো হয়। গতকাল সোমবার রাতে এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
২ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, রাজা শাহ আলম উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক হওয়ায় আল্লাহ’র কাছে শুকরিয়া জানানো হয়। তাকে আরও বড় পদে নেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে দিতে আল্লাহ’র কাছে দোয়া করেন কুতুপালং শরণার্থীরা ক্যাম্পের মুসল্লিরা।
ভিডিও প্রচার পাওয়ার পর কক্সবাজারজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। অনেকে বলছেন, মানবিক আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি নাগরিকত্ব বাগিয়ে নেয়া রোহিঙ্গাদের সামনে রেখে এদেশে স্থায়ী হতে যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তারই বহিঃপ্রকাশ এ দোয়ার উচ্চারণ। কৌশলে বিত্তবৈভবের মালিক হয়ে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব কব্জা করা রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিক দল এবং ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে অভিমত বোদ্ধা মহলের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হোটেল ব্যবসায়ী রাজা শাহ আলম কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সহসভাপতি। তিনি সম্প্রতি উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মনোনীত হয়েছেন। ইতিমধ্যে ৩৩ সদস্যের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করেছেন তিনি।
সূত্র জানায়, মিয়ানমার সরকারের চাপের মুখে ৬০-এর দশকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন কাশেম রাজা। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানীর পাহাড়ি এলাকায় স্বপরিবারে আশ্রয় নেন তিনি। পরিবর্তীতে সেই এলাকাতেই বসতি স্থাপন করে ধীরে ধীরে সেখানে থিতু হন নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের বিপ্লবি এই নেতা। সেখানে জন্ম হয় কাশেম রাজার ৩ ছেলে ও ২ মেয়ের। কাশেম রাজার প্রথম সন্তান হলেন শাহা আলম চৌধুরী ওরফে রাজা শাহ আলম।
সূত্র আরও জানায়, ৭০’র দশকে মিয়ানমারের গুপ্তচরেরা উখিয়ার ইনানীর পাহাড়ি এলাকায় কাশেম রাজাকে হত্যা করে। এরপর পরিবারের হাল ধরেন রোহিঙ্গা নেতার বড় ছেলে রাজা শাহ আলম। তবে তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য বাবার মতো সক্রিয় লড়াই করার পরিবর্তে পরিবার গোছানোর কাজে মনোনিবেশ করেন। শুরু করেন মাছের ব্যবসা। ধীরে ধীরে ব্যবসায় সফলতার হাত ধরে কক্সবাজার সৈকতের লাবণী পয়েন্টে হোটেল মিডিয়া নামের একটি পর্যটন সেবী আবাসন প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন তিনি।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘নিয়মমতে পরিচ্ছন্ন যে কেউ দলে সম্পৃক্ত হতে পারেন। শাহ আলম চৌধুরীও আমাদের মাঝে তেমনই একজন। কেউ কারও জন্য শুভকামনা বা কোনো বড় কিছু প্রত্যাশা করে দোয়া করলে সেটার দায় দোয়াকারীদের ওপর বর্তায়। তবে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের কামনা একটু বেশি হয়ে গেছে বলে মনে হলো।’
দোয়া মাহফিলের বিষয়ে জানতে উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক শাহা আলম চৌধুরী ওরফে রাজা শাহ আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক