মহাত্মা গান্ধীর ঐতিহাসিক লাঠি

প্রকাশিত: ৯:২৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২, ২০২০

মহাত্মা গান্ধীর ঐতিহাসিক লাঠি
নিউজটি শেয়ার করুন

 

২ অক্টোবর ১৮৬৯ গুজরাত রাজ্যের পরবান্দার গ্রামে জন্ম নিয়ে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ভারতকে ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সঞ্চয় বলতে কিছুই রেখে যেতে পারেননি। সাদামাটা পোশাক আর একটি লাঠি ছিল তাঁর সম্বল ও অবলম্বন। তবু তিনি জয় করতে সক্ষম হন কোটি কোটি ভারতবাসীর হৃদয়।

 

স্বাধীনতার জন্য, সত্যাগ্রহের জন্য, দলিত ও নিপীড়িতের রক্ষার জন্য, সাম্প্রদায়িক হানাহানি বন্ধ করে সম্প্রীতি আনয়নের জন্য মহাত্মা গান্ধী শীর্ণ শরীরে লাঠিতে ভর করে চারণের মতো ছুটেছে সমগ্র ভারতবর্ষে। ঐতিহাসিক লাঠিটি মহাত্মার জীবন ও কর্মের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী অংশ হয়ে জড়িয়ে ছিল।

 

চার সন্তান ছিলেন গান্ধীর উত্তরাধিকার। হরিলাল গান্ধী, রামদাস গান্ধী, মণিলাল গান্ধী ও দেবদাস গান্ধী, এই চারজনই উত্তরাধিকার সূত্রে লাঠি পাবার দাবিদার ছিলেন। কিন্তু কেউই তা পাননি।

 

কিংবা গান্ধীর রাজনৈতিক আদর্শের মূলস্থল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস মতাদর্শিক উত্তরাধিকার রূপে লাঠিটি পেতে পারতো। কিন্তু কংগ্রেসও সেটা পায়নি।

 

মহাত্মার লাঠি জাতীয় সম্পদ ও ঐতিহাসিক নিদর্শন রূপে স্বীকৃতি লাভ করে। দিল্লির শান্তিবনে গান্ধীর স্মৃতিসৌধের জাদুঘরে জনসাধারণের অবারিত দর্শনের জন্য লাঠিটি স্থান পেয়েছে।

 

একটি লাঠিতে ভর করে একজন মানুষ ঘরে ঘরে, জনপদে জনপদে যাচ্ছেন। স্বাধীনতা, স্বরাজ্য ও আত্মশক্তির বিকাশের ডাক দিচ্ছেন। পরাধীনতা, কূপমন্ডুকতা, হিংসাকে রুখে দিতে লড়ছেন শান্তির মহামন্ত্রে। গান্ধীর ইমেজ বলতে প্রতিভাত হয় লাঠিতে ভর করা এমনই ছবি।

 

গান্ধীর জন্মদিনে চারিদিকে এতো রক্তপাত, হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়ন, নির্যাতন দেখে অবশ্যই মহাত্মার কথা মনে পড়বে। ধর্ষিতা নারীটি, মৃত্য শিশুর দেহটি, নিগৃহীত মানবতা অস্ফুট আর্তনাদে চাইবে, সত্য, অহিংসা ও মানবতায় মোড়ানো লাঠি হাতে ঠকঠক করে কেউ একজন এগিয়ে আসুন। হিংসা ও উগ্রতাকে পরাজিত করুন শান্তির অমীয় ধারায়। এমনটি হলে গান্ধীর প্রকৃত স্মরণ ও তাঁর প্রতি যথার্থ সম্মান জানানো হবে।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ