ঢাকা ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২০
বিনোদন ডেস্ক : লোকগানের স্বর্গীয় যাদুকর, বাউল সাধক শাহ আব্দুল করিমের একাদশ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন বাংলা লোকগানের কিংবদন্তি এ শিল্পী। বাংলা সংগীতে তাকে ‘বাউল সম্রাট’ হিসাবে সম্বোধন করা হয়।
১৯১৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের ভাটি অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন শাহ আব্দুল করিম। সুনামগঞ্জের কালনী নদীর তীরে বেড়ে উঠেন তিনি। তার পিতার নাম ইব্রাহীম আলী ও মাতার নাম নাইওরজান। দারিদ্র ও জীবন সংগ্রামের মাঝে বড় হওয়া বাউল শাহ আবদুল করিমের সঙ্গীত সাধনার শুরু ছেলেবেলা থেকেই। বাউল সম্রাটের প্রেরণা তার স্ত্রী আফতাবুন্নেসা; যাকে তিনি আদর করে ‘সরলা’ নামে ডাকতেন।
দারিদ্রের সঙ্গে আজন্ম যুদ্ধ ছিল শাহ আব্দুল করিমের। কৃষি কাজের পাশাপাশি রচনা করেন কালজয়ী সব লোকগান। সমাজের নানা কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িকতা, অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে সুরে সুরেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন আজীবন।
মাত্র আট দিন ব্রিটিশদের পরিচালিত নৈশ বিদ্যালয়ে পড়েছিলেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে গুজব রটানো হলো বিদ্যালয়ের ছাত্রদের ব্রিটিশ বাহিনীতে যোগ দিয়ে যুদ্ধ করতে হবে। সেই আশঙ্কায় অন্যদের মতো তিনিও বিদ্যালয় ছাড়লেন। কিন্তু নিজের চেষ্টা আর সাধনায় কাজ চালানোর মতো পড়াশোনা ঠিকই শিখেছিলেন তিনি। সেই পড়াশোনা আর জীবনের বাস্তবতাকে কাজে লাগিয়ে রচনা করে ফেলেন প্রায় দেড় হাজার গান। যার অনেকগুলোই এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
‘গাড়ি চলে না চলে না’, ‘চলে না-রে গাড়ি চলে না’, ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’, ‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু-মুসলমান’, মিলিয়া বাউলা গান’, ‘ঘাঁটু গান গাইতাম’ কিংবা ‘কোন মেস্তরী নাও বানাইলো কেমন দেখা যায়’, ‘ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ুর পঙ্খী নাও’সহ অজস্র কালজয়ী গানের স্রষ্টা শাহ আব্দুল করিম। সংস্কৃতিতে অসামান্য অবদান রাখায় পেয়েছেন একুশে পদক, শিল্পকলা একাডেমী পদক, জাতিসংঘের সম্মাননা, লেবাক এওয়ার্ডসহ নানা সম্মাননা।
২০০৯ সালের এই দিনে ৯৩ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এ মরমী কবি। শাহ আবদুল করিম হাওরের ঢেউ আর কালনী নদীর স্রোত, গ্রামের সহজ-সরল মানুষের প্রাত্যহিক জীবন, দুঃখ-দুর্দশা, প্রেম-ভালোবাসাকে তুলে ধরেছেন তার গানে। ছোট ছোট গল্প বুনে সৃষ্টি করেছেন কালজয়ী সব গান।
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক