বাউফলে দুই সতীনের টানাটানিতে প্রাণ গেলো শিশুর

প্রকাশিত: ৫:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৭, ২০২৩

নিউজটি শেয়ার করুন

 

পটুয়াখালীর বাউফলে দুই সতীনের টানাটানিতে জুবায়ের নামের ৭ দিন বয়সী একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

 

 

উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের জামালকাঠী গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

 

 

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের জামালকাঠী গ্রামের কাদের চৌধুরীর ছেলে জহিরুল ইসলাম তার প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে সম্প্রতি বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাটকাঠী গ্রামের শফিউদ্দিন তালুকদারের মেয়ে সুমা আক্তারকে বিয়ে করেন। এক সপ্তাহ আগে সুমা আক্তার একটি পুত্র সন্তানের জম্ম দেন। এরপর থেকে সুমা আক্তার ও তার সন্তানের খোঁজ-খবর নেওয়া বন্ধ করে দেন জহিরুল। বৃহস্পতিবার সকালে সুমা আক্তার তার ৭ দিন বয়সি সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি এসে জানতে পারেন তার স্বামী আগেও একটি বিয়ে করেছেন।

 

 

 

এ সময় সুমা তার স্বামীর ঘরে অবস্থান নেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন জহিরুলের প্রথম স্ত্রী শাবনাজ। সুমাকে সন্তানসহ বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন তার সতীন শাবনাজ। কিন্তু সুমা কিছুতেই তার স্বামীর সংসার ছেড়ে যেতে রাজি না হওয়ায় সারাদিন দুই সতীনের মধ্যে ঝগড়া হতে থাকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাবনাজ জোরপূর্বক সুমাকে তার সন্তানসহ ঘর থেকে বের করতে যান।

 

 

 

এ সময় দুই সতীনের ধস্তাধস্তিতে ৭ দিন বয়সি জুবায়ের তার মায়ের কোলে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। দ্রুত জুবায়েরকে কালিশুরী বাজারের একটি ক্লিনিকে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ওই শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পটুয়াখালী হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।

 

 

 

শিশুটির মা সুমা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, জহিরুল ইসলাম আমাকে অনেক আগেই বিয়ে করে আত্মীয় স্বজনদের কাছে গোপন রেখেছেন। আমি অসুস্থ হওয়ার পর আমার স্বামী চিকিৎসার জন্য ৫ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়ে ফোন করে বলেন, তুমি চিকিৎসা করেনিও, আমি তাবলীগ জামাতে যাচ্ছি, ফোনে খোঁজ-খবর নিব। সন্তান জম্মের পর আমি তাকে ফোন করে বলি আমি ও আমার সন্তান খুব অসুস্থ, তুমি একটু আসো। এরপরই জহিরুল সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। নিরুপায় হয়ে আমি স্বামীর বাড়ি চলে আসি। আজ আমার সন্তানকে টেনে হিচড়ে মেরে ফেলেছে তার প্রথম স্ত্রী। আমি এর বিচার চাই।

 

 

 

অবশ্য সুমা আক্তারের সতীন শাবনাজ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই বাচ্চা ৭ মাসে ভূমিষ্ট হয়েছে। শিশুটি অপুষ্টিহীনতায় ভুগছে। অসুস্থ বাচ্চা নিয়ে এসে এখন আমাকে ফাঁসানোর পাঁয়তারা চলছে।

 

 

 

ধুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির বলেন, এ রকম একটি খবর শুনে ঘটনাস্থলে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়েছি। পরে শুনি পুলিশ এসে শিশুটির লাশ নিয়ে গেছে।

 

 

 

বাউফল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।’


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ