ঢাকা ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:২৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২২
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বরিশাল জেলা ও মহানগরে এবার অর্ধশতাধিক হাটে বসছে কোরবানির পশুর হাট। জেলার ১০ উপজেলা এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ২৩টি স্থায়ী হাটের পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষে এ পর্যন্ত ইজারা দেওয়া হয়েছে ৩৩টি। আগামী আরও এক-দুইদিন জেলায় অস্থায়ী হাটের ইজারা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা এবং মহানগরীর অস্থায়ী হাটগুলো এখন পর্যন্ত জমে ওঠেনি। সবে বেপারীরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পশু নিয়ে আসছেন হাটগুলোতে। এখনও অস্থায়ী হাটগুলোতে কেবল অস্থায়ী অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। আগামী ঈদের আগের চারদিন কোরবানির পশুর হাট জমজমাট থাকবে বলে আশা করছেন তারা।
বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় সারা বছর একটি পশুরহাট বসে বাঘিয়া এলাকায়। এর বাইরে এবার কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাটের জন্য মোট পাঁচটি আবেদন জমা পড়েছে সিটি করপোরেশনে।
৫টি আবেদনের মধ্যে নগরীর কাউনিয়া টেক্সটাইল বালুর মাঠ এবং রূপাতলী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর পাদদেশে দুটি অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার।
এদিকে, জেলার ১০ উপজেলায় স্থায়ী পশুরহাট রয়েছে ২২টি। এর বাইরে এবার ঈদ উপলক্ষে সোমবার পর্যন্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৩১টি পশুরহাটের।
জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখার অফিস সহকারী আকতারুজ্জামান জানান, উপজেলা প্রশাসন হয়ে পশুর হাটের আবেদনগুলো জেলা প্রশাসনে আসে।
এখান থেকে যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেন জেলা প্রশাসক। আগামী আরও এক-দুই দিন কিছু অস্থায়ী হাটের অনুমতি দেওয়া হতে পারে বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শহীদুল ইসলাম বলেন, পশুরহাটগুলোতে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, জাল নোট শনাক্ত এবং ছিনতাইকারী রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ ওইসব হাটের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদান করবে।
জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন পশুরহাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থায়ী পশুরহাটগুলোতে কিছু পশু বেঁচাকেনা হচ্ছে। অনেক ক্রেতা দাম যাচাই এবং পশু নির্বাচনে বিভিন্ন হাট ঘুরছেন। কিনবেন সুবিধাজনক সময়ে। এসব হাটে স্থানীয় খামারি এবং গৃহস্থের গরু-ছাগল ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন জাতের এবং বিভিন্ন সাইজের ষাড় আনা হচ্ছে।
সোমবার বিকেলে জেলার বানীরাপাড়া উপজেলার গুয়াচিত্রা স্থায়ী পশুরহাটে দেখা যায়, স্থানীয় গৃহস্থের ষাড় বেশি। স্থানীয় বিভিন্ন খামারের পশুও এসেছে অনেক।
এছাড়া কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আকর্ষণীয় ষাড় এনেছেন বেপারীরা। দেড় লাখ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দামের ষাড় উঠেছে সোমবার গুয়াচিত্রা পশু হাটে। হাটে ৭০-৮০ হাজার থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাক মূল্যেও ষাড় গরুর সংখ্যা বেশি।
কুষ্টিয়া থেকে ২০টি আকর্ষণীয় ষাড় নিয়ে গত রবিবার গুয়াচিত্রা হাটে এসেছেন মন্টু বেপারী। সোমবার পর্যন্ত ৩টি ষাড় বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৬০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকার মধ্যে। তার একটি ষাড়ের দাম হাঁকছেন সাড়ে ৩ লাখ টাকা। ষাড়টি ১০ মণ ওজন হবে বলে তিনি জানান।
মন্টু বেপারীর মতে, এবার আগের বছরের তুলনায় পশুর দাম ১০ থেকে ১৫ ভাগ বেড়েছে। পশু খাদ্যের সংকট এবং অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে এবার খামারিরা তেমন সুবিধা করতে পারছে না বলে তিনি জানান।
আগামী ৬ জুলাইয়ের পর থেকে কোরবানির আগের দিন পর্যন্ত পশুরহাট জমজমাট হবে বলে আশা করেন কুষ্টিয়ার আরেক বেপারী আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, তারা বাজার দেখছেন। সামান্য কিছু লাভ পেলেই ছেড়ে দেবেন পশু।
বরিশাল থেকে গুয়াচিত্রা পশু হাট যাচাই করতে যাওয়া আবুল বাশার ও শাহিন হাওলাদার বলেন, বাজারে প্রচুর সংখ্যক পশু আছে। তবে দাম হাকা হচ্ছে বেশি। তারা বাজার যাচাই করছেন। যে হাটে সহনীয় দাম হবে সেখান থেকে কোরবানির পশু কিনবেন তারা।
তারা বলেন, পাইকররা দাম ছাড়ছে না। আরও বাড়ার আশায় আছেন। শেষ পর্যন্ত কোরবানির ৩ দিন আগে বেঁচাকেনা জমে উঠবে বলে তারা মনে করেন।
জেলা এবং মহানগরীর সবগুলো পশুর হাটের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা।
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক