বরিশালে অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রি!

প্রকাশিত: ৭:৫০ অপরাহ্ণ, জুন ৫, ২০২২

বরিশালে অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রি!
নিউজটি শেয়ার করুন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বরিশালের আগৈলঝাড়ায় অভাবের তাড়নায় সদ্য ভুমিষ্ট হওয়া নবজাতককে অর্থের বিনিময়ে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে ওই নবজাতকের পিতা-মাতা বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে বলচেন দত্তক দিয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

 

এর আগেও একই দম্পতি তাদের আরেকটি সন্তানকে এভাবেই হস্তান্তর করেছেন।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের টেমার গ্রামের হতদরিদ্র তিন সন্তানের জনক সুধাংশ বাড়ৈ সন্তানের ভরণ-পোষণের অর্থ জোগান দিতে না পারার কারণেই পরপর দুটি ছেলে সন্তান দত্তক দিয়ে দিয়েছেন।

 

হতদরিদ্র সুধাংশ বাড়ৈ (৬৭) জানান, তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান না হওয়াতে তিনি একটি ছেলে দত্তক গ্রহণ করেন। পরে প্রথম স্ত্রী মৃত্যুবরণ করায় গত ৮ বছর পূর্বে একই উপজেলার কাঠিরা গ্রামের কল্পনা ঢাকীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তার পেটে পরপর দুটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়। তিন ছেলে ও স্বামী-স্ত্রী সংসারে অভাবের কারণে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি।

 

গত বছর তার কল্পনার গর্ভে আবারও একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেয়। সেই সন্তানের ভরণ পোষণের অর্থ জোগান দিতে না পারার কথা চিন্তা করে তাদের ছেলে সন্তানকে এক জনের কাছে দত্তক দিয়ে দেন। গত ৩ জুন তার স্ত্রী আবারও পঞ্চম ছেলে সন্তানের মা হয়। পরে তার স্ত্রীর এক নিকট আত্মীয় নিঃসন্তান দম্পত্তির কাছে তার সদ্য জন্ম নেওয়া ছেলে সন্তানকে দত্তক দেন ।

 

সুধাংশ বাড়ৈ আরও জানান, জরাজীর্ণ একটি ঘরে তিনি তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন। সংসারে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটান তিনি। অভাবের কারণে দ্বিতীয় ঘরের সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছেন না।

 

সন্তান বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে সুধাংশ বাড়ৈর স্ত্রী কল্পনা ঢাকী জানান, সন্তানকে যে দুধ কিনে খাওয়াবেন সেই সামর্থ্যও তাদের নেই। সদ্য সন্তান জন্ম নেওয়া ছেলে শিশুর জন্য একদিকে তার জন্য যেমন আনন্দের, ঠিক তেমনি আবার বেদনারও। শিশু জন্ম দেওয়ার পরও শুধু মাত্র অভাবের তাড়নায় নিজের সন্তানকে অন্যর কাছে দিতে হয়েছে।

 

সুধাংশ ও তার স্ত্রীর বলেন- সরকার যদি আমাদের কোনো সাহায্য-সহযোগিতা এবং আমাদের একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিত তাহলে আমি আমার সন্তানদেরকে দত্তক দিতাম না।

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিষয়টি হৃদয় বিদারক। অভাবের তাড়নায় একটি মানুষ তার নিজের সন্তানদেরকে অন্যর কাছে দত্তক দিয়ে দেন। ওই পরিবারের খোঁজ-খবর নিয়ে আমার সাধ্যমত তাদের সহযোগিতার চেষ্টা করব।

 


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ