ঢাকা ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৩৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ৬, ২০২৩
নবকন্ঠ ডেস্ক, বরিশাল:: মেয়ের মৃত্যুর খবর আগেই জেনেছিলেন মা। ঘরে বসে আহাজারি আর প্রার্থনা করছিলেন মেয়ের জন্য।
কিছুক্ষণ পর একবার কলিজার টুকরা মেয়েটি মুখটি দেখার জন্য স্বজনদের সহযোগিতায় ঘর থেকে উঠানে রাখা কফিনের পাশে আসেন মা। কিন্তু অবুঝ শিশু সন্তানের মুখটা দেখা যে তারও শেষ দেখা তা বুঝতে পারার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মা তন্বী বেগম (২২)।
এমন মৃত্যু যেন কেউ মানতেই পারছেন না। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। মর্মান্তিক এ ঘটনা বরগুনার পাথরঘাটায়। তিন মাস বয়সী রাফিয়া নামে কন্যা সন্তানের মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে মা তন্নী বেগমের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে মা ও সন্তানের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
এর আগে বুধবার (৫ জুলাই) রাত ৮টার দিকে রাফিয়ার এবং পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে মা তন্নী বেগমের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে মা-মেয়ের জানাজা আর দাফনে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর কুপধন এলাকায়। স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃত তন্নী বেগম একই এলাকার করম পহলানের ছেলে মো. রিয়াজের স্ত্রী। তাদের সংসারে রাফিয়া প্রথম সন্তান।
রাফিয়ার বাবা মো. রিয়াজ পহলান জানান, গত ০৪ জুলাই রাফিয়ার শরীরে জ্বর দেখে স্থানীয় ফার্মেসিতে নিয়ে গেলে সেখান থেকে শিশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় রাফিয়ার বাবা রিয়াজকে। সেখান থেকে বরগুনার শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সোহরাব হোসেনের কাছে নিয়ে যান তারা। সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলে রাফিয়া কিছুটা সুস্থ হয়। পরে আবারও তার জ্বর বেড়ে যায়। বুধবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পথে রাফিয়ার মৃত্যু হয়।
পরে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে পরের দিন সকালে দাফনের জন্য রাখা হয়। সকালে মা তন্নী বেগম তার শ্বশুর করম পহলানকে তার জন্য ২ রাকাত নামাজ পরে দোয়া করার কথা বলে সন্তানের লাশের কফিনের সামনে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যান। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই মা তন্নী বেগম মারা যান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা জানান, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক একটা বিষয়, শুনে খুবই খারাপ লেগেছে। সন্তান চলে গেলে স্ত্রীকে ধরে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা হয়। আল্লাহ রিয়াজের দু’জনকেই নিয়ে গেছেন। আমি গতকাল থেকেই তাদের পরিবারের খোঁজ-খবর রাখছি।
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক