বরগুনায় ডিবির দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

প্রকাশিত: ৪:৪৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১, ২০২১

বরগুনায় ডিবির দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন
নিউজটি শেয়ার করুন

 

বরগুনা : বরগুনার তালতলীতে নোথায়ং মগ নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আটক করা হয় ইউনুচ ও ইউসুফকে। পরে তাদের পরিবারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েও রিমান্ডে অমানুষিক নির্যাতনের প্রতিবাদে জেলা ডিবি পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেন ও এসআই আশরাফের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

 

শুক্রবার (১ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে উপজেলার নামেশে পাড়া এলাকায় ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

 

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ২০১৭ সালের ২২ জুন উপজেলার নামেশে পাড়া এলাকায় নোথায়ং মগ নামের এক ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ তার নিজ ঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপরে তালতলী থানায় মৃত নোথায়ং মগের নাতি জোয়েন মগ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যেখানে আসামি করা হয় একই এলাকার শাহআলম মীর, ইলিয়াস মীর, আল-আমিন মীর ও নজরুলকে। কিছুদিন পরে সরাসরি একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন আমতলী কোর্টে। যেখানে ওই ৪ জন ছাড়াও আসামি করা হয় শাহ আলম মীরের স্ত্রী ফাতেমা, আ. হক দফাদার ও ছগিরকে।

 

পরে মামলাটি ৫০২ডি (১) অনুযায়ী এস্টে করায় বাদী আফ্রুসে মগ বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত ফৌজদারি রিভিশনে মামলা দায়ের করেন। ফৌজদারি রিভিশন শুনানির পরে জোয়েন মগের মামলার সাথে এড করে তালতলী থানার অফির্সাস ইনচার্জকে তদন্ত নির্দেশ দেয় আদালত। পরে মামলাটি ডিবিতে বদলি হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আশরাফ উদ্দিন ও অফিসার ইনচার্জ খন্দকার জাকির হোসেন বাদী জোয়েন ও বাদী আফ্রুসে মগের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে একটি প্রভাবশালী মহলের কাছে প্রভাবিত হইয়া এই মামলার সাথে কোনো সর্ম্পক নেই ইউসুফ মুন্সী ও ইউনুচ মুন্সীকে গত ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর আটক করে আদালতের কাছে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়।

 

পরে ইউসুফ মুন্সী ও ইউনুচ মুন্সীর পরিবার থেকে ছোটভাই ইদ্রিস মুন্সী যোগাযোগ করলে জানায়, তোমার ভাইকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনে হাত থেকে বাঁচাতে হলে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। পরে নিরূপায় হয়ে ৪০ হাজার টাকা দেই তাদের। কিন্তু ঘুষ পেয়েও ইউসুফ মুন্সী ও ইউনুচ মুন্সীকে রিমান্ডে নিয়ে পুরুষাঙ্গে গলিত মোম ও অমানুষিক র্নিযাতন করে এই মামলার স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়।

 

বক্তারা আরও বলেন, এলাকায় নিরীহ লোকদের ডিবির ওসি জাকির ও এসআই আশরাফ বিভিন্ন সময়ে হয়রানি করে আসছে। এ হয়রানি থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতা চেয়েছেন মানববন্ধনে আসা ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ। পাশাপাশি ওসি জাকির ও এসআই আশরাফের বিরুদ্ধে সঠিকভাবে তদন্ত করে বিচারের দাবি করেন তারা। আর নির্দোষ ইউসুফ মুন্সী ও ইউনুচ মুন্সীকে দ্রুত মুক্তির দাবি করেন তারা।

 

এবিষয়ে ডিবির ওসি খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ এনে মানববন্ধর করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। একটি হত্যা মামলার তদন্ত সাপেক্ষ প্রমাণ পেলে ইউসুফ মুন্সী ও ইউনুচ মুন্সীকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু একটি কুচক্রী মহলের চক্রান্তে এসব করা হচ্ছে। ইউসুফ মুন্সী ও ইউনুচ মুন্সীকে কোনো ধরনের নির্যাতন ও তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি।

 

পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লীক বলেন, এবিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ