পটুয়াখালীতে মা-বাবাকে নির্যাতন, শিক্ষক ছেলে গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১০:৫৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২২

নিউজটি শেয়ার করুন

 

পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ মা-বাবাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মো. মাহাবুব আলম লিটন (৪০) নামে এক শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে পটুয়াখালী পৌর শহরের মৃধা বাড়ি সড়ক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

 

গ্রেফতার লিটন পটুয়াখালী পৌর শহরের কলেজ বোর্ড এলাকার মো. আবুল হাশেম হাওলাদারের ছেলে। তিনি গলাচিপা উপজেলা আমখোলা ইউনিয়নের দক্ষিণ বাউরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

 

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. জাহিদুল ইসলাম (রকি) দাবি করেন, লিটনের বাবা পটুয়াখালী জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী প্রকৌশলী শাখায় চাকরি করতেন। ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে অবসরে যান। এরপরে পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে পৌর শহরের মৃধা বাড়ি সড়কের একটি বাড়িতে করে বসবাস করেন। তার মেজো ছেলে লিটন ও পুত্রবধূর আকলিমা বেগম দুই জনই স্কুল শিক্ষক। তারা বাবা-মায়ের ভরণপোষণ দিতেন না। উল্টো ১০ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত বাবার সংসারে ছিলেন। তাছাড়া বাবার কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশলে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এরপরও ছেলে ও পুত্রবধূর দাবি করা টাকা দিতে না পারায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।

 

তিনি জানান, পুত্রবধূ আকলিমা বেগমের নির্যাতনে তার শাশুড়ি অনেকদিন হাসপাতালে ছিলেন। টাকা দিতে না পারায় ২০২১ সালের প্রথম দিকে বাবা-মাকে শারীরিক নির্যাতন করে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেন লিটন ও তার স্ত্রী। এরপর বয়সের ভারে ন্যুব্জ বাবা-মা গ্রামের বাড়ি গলাচিপাতে চলে যান। কিছুদিন পরে পটুয়াখালীতে ফিরে ওই বাসায় ওঠা সম্ভব হয়নি তাদের। পরে অন্য একটি বাসায় গিয়ে ওঠেন। চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি বৃদ্ধ বাবা-মায়ের বাসায় গিয়ে হামলা চালান লিটন। এ সময় দা দিয়ে কুপিয়ে বাবা ও বড় ভাই ফারুককে হত্যাচেষ্টা চালান। এ ঘটনায় বৃদ্ধ বাবা ৭ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে একটি মামলা করেন। মামলায় ছেলে লিটনকে প্রধান আসামি করেন। আসামি করেন পুত্রবধূ আকলিমাকেও। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে প্রধান আসামি মাহবুব আলম লিটনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। দ্বিতীয় আসামি আকলিমা বেগমের বিরুদ্ধেও সমন জারি করেন।

 

এ আইনজীবী আর জানান, লিটনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর পটুয়াখালী সদর থানায় এবং চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ করেন তার বাবা। এর আগে, পুলিশ সুপারের কাছেও তিনি অভিযোগ করেছিলেন।

 

থানায় অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. রেজাউল জানান, ভুক্তভোগী বাবা-মাসহ মাহাবুব আলম লিটন ও তার স্ত্রীকে নিয়ে থানায় বসা হয়েছিল। তাদেরকে বোঝানো হয়েছিল।

 

পটুয়াখালী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান, যেহেতু পারিবারিক মামলা এ বিষয়ে শিক্ষা অফিসের কিছু বলার নেই।

 

সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান জানান, তাকে সংশ্লিষ্ট মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ