তিতাসের তদন্ত প্রতিবেদন বানোয়াট, দাবি মসজিদ কমিটির

প্রকাশিত: ৩:৩৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২০

তিতাসের তদন্ত প্রতিবেদন বানোয়াট, দাবি মসজিদ কমিটির
নিউজটি শেয়ার করুন

 

ঢাকাঃ নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের দায় মসজিদ কমিটি এবং দু’জন গ্রাহকের ওপরে চাপিয়েছে তিতাস গ্যাসের তদন্ত কমিটি। তবে তিতাসের তদন্ত প্রতিবেদন সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা দাবি করেছে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও স্থানীয়রা।

 

তদের দাবি, মসজিদের নিজস্ব কোনো গ্যাস লাইন না থাকলেও মসজিদে গ্যাস প্রবেশ করে উত্তর পাশের লাইন দিয়ে। লাইন মেরামতের জন্য তিতাসে যোগাযোগ করা হলে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে সংস্থাটি। মসজিদ কমিটি বিষয়টি মুসল্লিদের কাছে তুলে ধরলে অনেকে টাকা দিতেও শুরু করেন। কিন্তু টাকা যোগাড় না হওয়ায় লাইন মেরামত করা যায়নি বলে দাবি মসজিদ কমিটির।

 

তবে একটি বিদ্যুৎ লাইন থাকলেও রোজার মাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেতে একটি অবৈধ সংযোগ নেয়ার কথা স্বীকার করেছে কমিটি। এছাড়া মসজিদ নির্মাণের পরেই গ্যাস লাইন বসানো হয় দাবি করে কমিটি।

 

এর আগে তিতাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, জমে থাকা গ্যাসে বিদ্যুতের স্পার্ক হয়। ফলে আগুন লেগে নারায়ণগঞ্জের মসজিদে বিস্টেম্ফারণ ঘটেছে। মসজিদ নির্মাণের সময় পার্শ্ববর্তী গ্যাসলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই লাইন থেকে গ্যাস বের হয়েছে। মসজিদের একটি বিদ্যুৎ লাইনও ছিল অবৈধ। ক্ষতিগ্রস্ত পাইপলাইনটি ২২ বছর আগে পরিত্যক্ত হয়েছিল। দু’জন গ্রাহক তিতাসকে না জানিয়ে নিজেরাই সংযোগ পাল্টানোর সময় এই পাইপলাইন পরিত্যাগ করেছিল। গ্রাহক দু’জন হলেন শওকত আলী ও বারেক দেওয়ান। সম্প্রতি গ্যাস লিকেজের বিষয়েও কেউ তিতাস গ্যাসকে অবহিত করেনি।

 

সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত কমিটির প্রধান তিতাসের মহাব্যবস্থাপক আব্দুল ওহাব বলেন, অবহিত না করে গ্রাহক তাদের নিজ উদ্যোগে স্থানীয়ভাবে রাইজারগুলো যেনতেনভাবে প্লাগ এবং সকেট দিয়ে স্থানান্তর করেছে। সংযোগ বদলের পর আগের লাইনটি রাইজারসহ মাটি চাপা দিয়ে রাখে। পাইপলাইনের ওপর মসজিদ নির্মাণ করায় তাদের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই লাইনের ছিদ্র থেকে নির্গত গ্যাস মসজিদের নিচে দিয়ে এসি রুমে জমা হয়। বিদ্যুতের অবৈধ লাইন ব্যবহার করতে গিয়ে স্পার্কের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটে মসজিদে আগুন ধরে। তাই এই দুর্ঘটনায় গ্রাহক ও মসজিদ কমিটির দায় রয়েছে।

 

উল্লেখ্য গত ৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে এশার নামাজ আদায়ের সময় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড পল্গাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দগ্ধ অবস্থায় ভর্তি করা হয়। এ পর্যন্ত ৩১ জন মারা গেছেন। এক ব্যক্তি কেবল সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

 

চিকিৎসাধীন দগ্ধদের অবস্থাও ভালো নয়। মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি, ক্যাশিয়ারসহ ৫ জন ওই দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস, জেলা প্রশাসন, তিতাস গ্যাস, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ও সিটি করপোরেশন পৃথক পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। গতকাল দুটি কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে পৃথকভাবে সাংবাদিকদের ব্রিফ করা হয়।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ