ঢাকা ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৫৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ৭, ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের তৃতীয় পরিষদে ২৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিল ছিলেন রেজভী চৌধুরী। ওয়ার্ডটির চৌমাথা সংলগ্ন চৌধুরী বাড়ির সন্তান তিনি। কিন্তু পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এই জনপ্রতিনিধির আকস্মিক মৃত্যু হলে ওয়ার্ডটিতে পরর্তীতে উপ-নির্বাচনে অংশ জয়ী হন অপর একজন।
এদিকে রেজভীর মৃত্যুর পর তার আপন বড় ভাই ওয়ার্ডটির একসময়ের কমিশনার এমরান চৌধুরী জামাল জনসেবা শুরু করেন। পাশাপাশি তিনি ভাইয়ের পরিবার দেখাশোনাসহ রেজভীর রেখে যাওয়া সম্পত্তিও দেখভাল করেন। রেজভীর ভাই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদধারী এমরান চৌধুরী জামাল গত বছরের শেষ দিকে মৃত্যুবরণ করলে সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে উভয় পরিবারে দেখা দেয় বিরোধ।
এই বিরোধে সামিল হন তাদের বোনেরাও। সর্বশেষ এ বিরোধ এতটাই জোরালো রুপ নেয় যে বিষয়টি অভিযোগ থানা অবধি গড়িয়েছে। ছোট ভাই সাবেক কাউন্সিলর রেজভীর ছেলে রেশাদ চৌধুরী প্রান্ত বাবার সম্পত্তি জবরদখলসহ অর্থ আত্মসাতের মতো গুরুতর অভিযোগ এনেছেন চাচি অর্থাৎ এমরান চৌধুরী জামালের স্ত্রীসহ আপন ফুফুর বিরুদ্ধে, যাতে এক চাচাও সম্পৃক্ত রয়েছেন। এমনকি এমন অভিযোগ নিয়ে কাউন্সিলরপুত্র বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের দ্বারস্থও হয়েছেন।
রেজভীর স্ত্রী চায়না চৌধুরী জানান, রেজভীর মৃত্যুর পর ভাসুর এমরান চৌধুরী তাদের পাশাপাশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ জমিজমা দেখভাল করছিলেন। কিন্তু গত বছরের শেষ দিকে এমরান চৌধুরীর মৃত্যুর হলে তার সন্তান এবং বোনেরা রেজভীর সম্পত্তি জবরদখল করাসহ নগদ অর্থও আত্মসাৎ করেন। এমনকি কাউন্সিলর রেজভী চৌমাথা এলাকায় যে, ক্লাবটিতে বসতেন, সেটিও তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। এই ক্লাবের চাবিসহ বাবার অর্থ ফেরত চাইতে গেলে জামালের ছেলে, ছোট ভাই এবং বোন বিকুর মেয়ে একত্রিত হয়ে টালবাহানা শুরু করে। এমনকি রেজভীর মেয়েকে মারধরও করা হয়।
সাবেক কাউন্সিলরপত্নী জানান, এনিয়ে নিজেদের মধ্যে কয়েক দফা সালিশ বৈঠক হলেও তারা তা মানেনি। বরং হুমকি-ধামকি অব্যাহত রাখলে সর্বশেষ বাধ্য হয়ে কোতয়ালি থানা পুলিশে অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষাপটে পুলিশ তদন্ত করে সত্যতা পায় এবং পরবর্তীতে ভাসুর এমরান চৌধুরী জামালের স্ত্রী তাহেরা চৌধুরী টুলু, বোন লাইজু চৌধুরী বিকুসহ অভিযুক্তদের থানায় ডাকেন।
রেজভীর ছেলে প্রান্ত জানান, বাবার মৃত্যুর পর তার ব্যাংক হিসাব থেকে চাচা এমারন চৌধুরী জামাল ৯ লাখ টাকা উঠিয়ে নেন, এই অর্থ দিয়ে দেনা পরিশোধ করার কথা থাকলে তা দেননি। এর জামাল চৌধুরীর মৃত্যু হলে দেনাদাররা বাড়িতে আসা শুরু করেন। তখন তার স্ত্রী অর্থাৎ চাচির কাছ থেকে ৯ লাখ টাকাসহ বাবার সম্পত্তি বুঝে নিতে চাইলেই দেখা দেয় বিপত্তি।
তারা বাবার অর্থ-সম্পদ বুঝিয়ে না দিয়ে বরং তা দখলে রাখতে নানা কৌশলগ্রহণ করাসহ হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন। প্রান্ত জানান, এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ তাদের ডেকে নিয়ে ক্লাবের চাবিসহ নগদ অর্থ বুঝিয়ে দিতে বলেছেন।
কোতয়ালি মডেল থানার এসআই আরাফাত হাসান বলেন, সাবেক কাউন্সিলর রেজভীর ছেলের অভিযোগের ভিত্তিতে তার চাচি এবং ফুফুসহ বেশ কয়েকজনকে ডাকা হয়েছিল। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন থানায় এসেছিলেন। কিন্তু তিনি আগেই কাউন্সিলর রেজভীর পরিবারের সাথে সমঝোতা করেছেন এবং সেখানে তিনি জনপ্রতিনিধির পরিবারকে ক্লাবের চাবিসহ অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক