চুল কেটে নারীকে নির্যাতন : পুলিশি নিরাপত্তা দানের নির্দেশ

প্রকাশিত: ৮:১৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০

চুল কেটে নারীকে নির্যাতন : পুলিশি নিরাপত্তা দানের নির্দেশ
নিউজটি শেয়ার করুন

 

 

ঝালকাঠিতে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও বিএনপি নেতা মিলে নারীর চুল কেটে নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতিত নারীকে এবং তাঁর স্বামীর জিম্মায় পুলিশী নিরাপত্তা দিতে ঝালকাঠির পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. শহিদুল্লাহ বাদি পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩১ ধারার বিধানমতে এ আদেশ দেন।

 

মামলার বিবরণে প্রকাশ গত ৩০ আগস্ট রাতে শহরের পূর্বচাঁদকাঠি এলাকার ব্যবসায়ী মো. বোরহান উদ্দিন খানের দ্বিতীয় স্ত্রী মোসাঃ পারভীন (৩০) কে জেলা পরিষদের সামনের একটি বাড়িতে মারধর এবং সেখান থেকে তুলে এনে পূর্বচাঁদকাঠির একটি বাড়িতে আটকে রেখে শারীরিক, মানসসিক নির্যাতন শেষে চুল কেটে দেয়া হয় জেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক শারমীন মৌসুমি কেকার নেতৃত্বে।

 

এ ব্যাপারে নির্যাতিত নারী বাদি হয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে শারমীন মৌসুমি কেকা, শহর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান তাপুসহ ৬ জনের নামে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন। আদালত ঝালকাঠি থানার ওসিকে অভিযোগ এফআইআর হিসেবে রেকর্ডের নির্দেশ দেন। ওই দিন রাতেই ঝালকাঠি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রেকর্ড হয় । মামলা দায়েরের পর তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. মিন্টু মিয়া ঘটনাস্থল থেকে সিসি টিভির ফুটেজ হার্ডডিস্কসহ জব্দ করেন।

 

মামলা দায়েরের পূর্বে ১৭/১৮ দিন ওই নারী গ্রামের বাড়িতে অবরুদ্ধ ছিলেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর নির্যাতিত নারীর আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম আসামীদের অব্যাহত হুমকির কারণে আদালতে এক আবেদনে ভিকটিম পারভীনের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেন। আদালত জিআর ১৭৬/২০২০ (ঝাল) মামলার নথি তলব করে শুনানী শেষে বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপারকে নিরাপত্তার আদেশ দেন।

 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. শহিদুল্লাহ আদেশে উল্লেখ করেন, ‘‘নির্যাতিত নারীর বক্তব্য অনুযায়ী এ মামলার আসামীরা অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং ঝালকাঠি শহরের ত্রাস বলিয়া খ্যাত। তাহাছাড়া আদালতের সামনে ভিকটিম পারভীনকে হাজির করা হইলে তাহার মাথার চুল কাটা দেখা গিয়াছে। ভিকটিম নিারাপত্তাহীনতায় ভুগিতেছেন বলিয়া আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয়। এমতাবস্থায় ভিকটিমকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩১ ধারার বিধানমতে নিরাপত্তা প্রদান করা প্রয়োজন। ন্যায় বিচারের স্বার্থে বাদীপক্ষের দরখাস্ত মঞ্জুর করা হইলো। প্রার্থীতমতে বাদীকে তাহার স্বামীর হেফাজতে রাখিয়া প্রয়োজনীয় সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানের জন্য পুলিশ সুপার ঝালকাঠির প্রতি নির্দেশ হইলো। আদেশের অনুলিপি অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপার ঝালকাঠি বরাবরে প্রেরণ করা হউক।’’

 

উল্লেখ্য, থানায় মামলা রেকর্ডের পর আটদিন পার হলেও পুলিশ কোনো আসামীকে গ্রেফতার না করায় মামলার বাদী ও সাক্ষীরা নিরাপত্তাহীনতায় আদালতে নিরাপত্তার আবেদন জানান। নির্যাতিত নারী পারভীন বলেন, আদালতে মামলা দায়েরের পূর্বে আমি ঝালকাঠির পুলিশ সুপারসহ নানাজনের কাছে অভিযোগ জানিয়ে কোন বিচার পাইনি। এখন আদালতই আমার শেষ ভরসা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাবিবুল্লাহ শুক্রবার বিকালে বলেন, আদালতের নির্দেশ এখনও আমরা হাতে পাইনি। নির্দেশ হাতে পেলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হবে।

 


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ