একটি স্বপ্নের ইতিকথা!

প্রকাশিত: ২:১০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩

একটি স্বপ্নের ইতিকথা!
নিউজটি শেয়ার করুন

 

২০১৮ সাল। মার্চ মাসের কোনো এক রাতের জন্য সাজানো হয়েছিলো দক্ষিণ হিংগলা গ্রাম। সে রাতকে ঘিরে কত আয়োজন তার ইয়ত্তা নেই। গ্রামের ছোটরা ঈদের আনন্দ উপভোগে আত্মহারা। প্রায় প্রতিবছর আমরা এ আনন্দ উপভোগের সাক্ষী!

 

 

 

আন্তর্জাতিক মানের স্কলারগণ আসবেন। নসিহত প্রদান করবেন তার জন্য এ আয়োজন। প্রত্যাশিত সে রাতে তখনো কোনো একজন স্কলার মাহফিলে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ নসিহত প্রদান করছিলেন। মাঠভর্তি শ্রোতা। শ্রোতাগণ বক্তার দিকে তাকিয়ে মন্ত্রমুগ্ধের মতো নসিহত শুনছেন। তৈয়্যবীয়া স্মৃতি সংসদের সম্মেলন শেষে উপস্থাপক আশরাফুজ্জামান তুষার উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে ঘোষণা করলেন যে, সামনে তৈয়্যবীয়ার খানকাহ (কমপ্লেক্স)’র কাজ শুরু করব…মঞ্চে উপস্থিত আঞ্জুমান সেক্রেটারি আনোয়ার সাহেব উপস্থাপকের পিঠে হাত বুলিয়ে বলছিলেন যে, বাবা অবশ্যই হবে হবে খানকাহ। আমরা সাথে আছি।

 

 

 

মাহফিলে উপস্থিত জনতার মধ্যে অনুদান দেওয়ার জন্য হিড়িক লেগে যায়। আমিসহ তৈয়্যবীয়া’র আরো স্বেচ্ছাসেবকরা প্যাণ্ডেলের ভেতরে খাতা-কলম নিয়ে ছুটে যায় যে, কে কি অনুদান দিবে তা টুকে রাখার জন্য। কেউ ডাকছে ভাই এদিকে আসেন আমার নামে ৫০০০ টাকা লিখেন, আবার কেউ বলছে বাবা আমার নামে ৫ বস্তা সিমেন্ট লিখো। আমি এরকম কয়েকজন কাছে গিয়ে একজন বৃদ্ধার নিকট এসে হকচকিয়ে যায়, তিনি আমাকে সুন্দর গ্রিটিংস দিয়ে বলেছেন- “বাবা আমি অনেকদিন ধরে চেয়ে আছি তোমাদের এলাকায় কখন একটা খানকাহ হবে! আমি জানি তোমাদের এ এলাকায় হুজুর ক্বিবলার সুদৃষ্টি আছে!” তাঁর সাথে আরো কয়েক মিনিট কথা বলে, অন্য আরেকজনের কাছে যায়…

 

 

 

মাহফিলে উপস্থিত শ্রোতাদের মধ্যে আনন্দের চেহেরা ভেসে উঠে! তখন আমি অনুভব করি এই এলাকায় একটা খানকাহ (কমপ্লেক্স) হোক সেটা অনেকেরই প্রত্যাশা।

 

 

 

অতঃপর আমরা খানকাহ’র জন্য জায়গা ঠিক করতে করতে কেটে যায় আরো কয়েক বছর,কিন্তু আমরা অনেকের কাছে গিয়েও জায়গা ক্রয় করতে পারিনি। সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ! কিন্তু আল্লাহতো বলেই দিয়েছেন লা-তাহযান (তোমরা হতাশ হয়োনা)।

 

 

 

হাঠাৎ একদিন আমাদের দক্ষিণ হিংগলা গ্রামের, হুজুর ক্বিবলার সাচ্চা মুরিদ প্রয়াত ইউনুস মিয়া সাহেব, সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের ডেকে বলেছিলেন তিনি খানকাহ’র জন্য জায়গা দিতে চান। সবাইতো খুশিতে আত্মহারা!

 

 

 

সবাই ভাবছে এবার তাহলে তৈয়্যবীয়া খানকাহ (কমপ্লেক্স) দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে! অতঃপর করোনার খপ্পরে কেটে যায় আরো কয়েক বছর।

 

 

 

 

তবে অনেক জল্পনাকল্পনা! অবশেষে খানকাহ’র কাজ শুরু হলো…প্রায় এক বছরের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছি কিন্তু সে স্বপ্ন এখনো অদৃশ্য! ভালোবাসা-মুহাব্বতের পাশাপাশি টাকাও থাকা লাগে। আমাদের স্বপ্ন হয়তো টাকার জন্যই অদৃশ্য…

 

 

আপনিও চায়লে আমাদের স্বপ্ন পূরনের সাক্ষী হতে পারেন।

 

লেখকঃ-

মোহাম্মদ নুরুন্নবী
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (ইউএসটিসি)।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ