ঢাকা ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:১১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২
আর মাত্র চারদিন পরেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহিদ দিবস। যথাযোগ্য মর্যাদায় সারাবিশ্বে এই দিনটি পালন করা হলেও অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে আছে আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্কুল মাঠের শহীদ মিনারটি।
১৯৭৭ /৭৮ সালে ৫২র ভাষা শহিদদের ও ১৯৬৯ সালের শহীদদের স্মরণে স্কুল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে নির্মিত হয় একটি পাকা শহিদ মিনার। কিন্তু নির্মাণের পর থেকেই রক্ষণাবেক্ষণ আর অযত্ন-অবহেলায় শহিদ মিনারটি এখন নাম মাত্র রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি এলে কোনো রকম পরিষ্কার করা হলেও পরদিন থেকেই বাজারের ব্যবসায়ীরা ময়লা আবর্জনা এখানে ফেলা শুরু করেন। শহিদ মিনারের বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ ও দ্রুত রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন সাংস্কৃতিককর্মীসহ উপজেলার বিশিষ্টজনেরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ইসহাক মাধ্যমিক বিদলয়ের মাঠের পশ্চিম পাশের অবস্থিত । নির্মাণ করা হয়েছে শহিদ মিনারটি। শহিদ মিনারের চারপাশ ও মিনারের ওপরে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ । শহিদ মিনারটি পাশে কিছু ব্যবসায়ী স্কুলের জমি দখল করে এমন ভাবে ঘর উত্তোলন করে বসবাস ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান করছে শহিদ মিনার আর এখন দেখা যায়না। এতে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যাথা নাই বলে জানান স্থানীয়রা।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম মাহমুদ বলেন, ব্যবসায়ীদের ঘর উত্তোলন করতে নিষেধ করা হয়েছে । কিন্তু তারা কারো কথা শুনেনা।
গুলিশাখালী ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মো. কামাল হোসেন মৃধা বলেন, শহীদ মিনারটি যে ভাবে অযত্ন অবহেলায় পড়ে রয়েছে । শহীদ মিনারটির পাশে যে ভাবে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকে তাতে তরুন প্রজন্মের কাছে ভাষা দিবসের গুরত্ব কমে যাবে।
গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড: মো. মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর বিষয়টি জেনেছি। স্কুল কর্র্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গুলিশাখালী ইউনিয়নের সন্তান অ্যাডভোকেট আবুল কালাম সামসুদ্দিন সানুসহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ভাষা শহিদদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা মাতৃভাষা বাংলা পেয়েছি। আর ভাষা শহীদদের স্মৃতি ও আত্মত্যাগের সঠিক ইতিহাস প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ পাড়া-মহল্লায় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার তৈরি করা হয়। শহিদ মিনার শুধু একদিন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য নয়। শহিদ মিনার যে ভাবে অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে এত তরুন প্রজন্মের কাছে শহীদ মিনারের গুরুত্ব কমে যাবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ বলেন, ‘বিষয়টি এর আগে কেউ আমাকে জানায়নি। শহিদ মিনার রক্ষণাবেক্ষণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Design & Developed By ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক