আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭৯ জনের প্রানহানী

প্রকাশিত: ৯:৪৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২০

আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭৯ জনের প্রানহানী
নিউজটি শেয়ার করুন

আগস্ট মাসে সারা দেশে ৩০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭৯ জন নিহত এবং ৩৬৮ জন আহত হয়েছেন। নিহতের মধ্যে ৬৬ জন নারী এবং ৩২ জন শিশু রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের আগস্ট মাসের সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

 

গত জুলাই মাসে ২৯৩টি দুর্ঘটনায় ৩৫৬ জন নিহত হয়েছিলেন। এই হিসাবে আগস্ট মাসে দুর্ঘটনা ৩.০৭ শতাংশ এবং প্রাণহানি ৬.৪৬ শতাংশ বেড়েছে। আগস্টের প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে দুর্ঘটনার মধ্যে এককভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। মোট ১২১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১২৯ জন নিহত। যা মোট নিহতের ৩৪.০৩ শতাংশ।

 

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪০.০৬ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ৮১ জন পথচারী নিহত হয়েছেন; যা মোট নিহতের ২১.৩৭ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৪৭ জন, অর্থাৎ ১২.৪০ শতাংশ।

 

এসময়ে ১৩টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৪৭ জন নিহত, ৩২ জন আহত ও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ৬টি পৃথক রেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ জন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৭টি জাতীয় দৈনিক, ৫টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

 

দুর্ঘটনায় বাসযাত্রী ১৬ জন, ট্রাকযাত্রী ৮ জন, পিকআপ যাত্রী ১৫ জন, কাভার্ডভ্যান যাত্রী তিনজন, মাইক্রোবাস যাত্রী ১৩ জন, প্রাইভেটকার যাত্রী ১৭, ট্রলি যাত্রী তিনজন, লরি যাত্রী একজন, ট্রাক্টর যাত্রী দুইজন, জীপ যাত্রী একজন, সিএনজি যাত্রী ১০ জন, ইজিবাইক-অটোরিকশা যাত্রী ৪৬ জন, নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র যাত্রী ২১ জন, রিকশা যাত্রী ছয়জন, লেগুনা যাত্রী তিনজন এবং বাই-সাইকেল আরোহী চারজন নিহত হয়েছেন।

 

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে শিক্ষক ১১ জন, চিত্রশিল্পী একজন, পর্বতারোহী একজন, পুলিশ সদস্য একজন, গ্রাম পুলিশ একজন, বিমান বাহিনীর কর্মচারী একজন, পল্লী বিদ্যুতে চাকরিজীবী একজন, স্কুল প্রহরী একজন, এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারী ১৩ জন, ঔষধ ও অন্যান্য পণ্যসামগ্রী বিক্রয় প্রতিনিধি নয় জন, রাজমিস্ত্রী-কাঠমিস্ত্রী দুই জন, মিল শ্রমিক দুইজন, পোশাক শ্রমিক আটজন, মাছ-সবজি ও গরু ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন ধরনের স্থানীয় পর্যায়ের ব্যবসায়ী ২৯ জন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা দুইজন এবং শিক্ষার্থী ৫৮ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ও ঢাকা কলেজের একজনসহ)।

 

এছাড়াও ফরিদপুর সদর উপজেলার এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজ কর্ম এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

 

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১১৩টি (৩৭.৪১ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ৯৮টি (৩২.৪৫ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৫৩টি (১৭.৫৪ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে এবং ৩৮টি (১২.৫৮ শতাংশ) শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে।

 

দুর্ঘটনাসমূহের ৭৬টি (২৫.১৬ শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৮৭টি (২৮.৮০ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৮৩টি (২৭.৪৮ শতাংশ) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৪৪টি (১৪.৫৬ শতাংশ) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১২টি (৩.৯৭ শতাংশ) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

 

দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দায়ী-ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ ২০.৮৯ শতাংশ, ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি ৩.৯১ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ ৬.৫২ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ১৪.১৭ শতাংশ, মোটরসাইকেল ২৩.৬৯ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি -অটোরিকশা-লেগুনা) ১৬.৬০ শতাংশ, নসিমন-পাখিভ্যান-অটোভ্যান- ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র ১০.৬৩ শতাংশ, রিকশা, বাই-সাইকেল ২.৭৯ শতাংশ এবং অন্যান্য (ড্রাম ট্রাক, রোড রোলার, লাটা হাম্বার, কনস্ট্রাকশন মিকচার মেশিন) ০.৭৪ শতাংশ।

 

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ৭৩টি দুর্ঘটনায় নিহত ৮৪ জন। সবচেয়ে কম বরিশাল বিভাগে। ২২টি দুর্ঘটনায় নিহত ১৯ জন।

 

একক জেলা হিসেবে ময়মনসিংহে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১৬টি দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত। সবচেয়ে কম মুন্সিগঞ্জে। ১টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।


নিউজটি শেয়ার করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ